ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলা তেহরানের কর্মসূচিকে মাত্র কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনসহ অন্যান্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
বুধবার (২৫ জুন) এক প্রতিবেদনে তিনটি সূত্রের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এ সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিবেদনটি তৈরি করে ‘প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা’, যা পেন্টাগনের প্রধান গোয়েন্দা শাখা এবং ১৮টি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে একটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তা জানান, ইরান কয়েক মাসের মধ্যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করতে পারে। তারা আরও অনুমান করছেন যে এটি আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই শুরু হতে পারে।
তবে সংস্থাটির এই প্রতিবেদন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রতিরক্ষাসচিব পিট হেগসেথসহ উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক।
কারণ এর আগে ট্রাম্প দাবি করেন, মার্কিন বোমারু বিমান ‘বি-২’ দিয়ে বাঙ্কার-বিধ্বংসী বোমা ব্যবহার করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে।
যদিও গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুন) ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছে, তাদের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কিছু ‘ক্ষয়ক্ষতি’ করেছে, যা মূলত ট্রাম্পের পূর্বের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত, যেখানে ট্রাম্প বলেছিল স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন’ করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিটের সিএনএন-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সবাই জানে চৌদ্দটি ৩০ হাজার পাউন্ড বোমা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে ফেললে কী ঘটতে পারে—’সম্পূর্ণ ধ্বংস’।
অপরদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি মূল্যায়নটি স্যাটেলাইট চিত্রের ওপর ভিত্তি করে করা হয়, তাহলে ফোর্ডো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার ক্ষতির পরিমাণ যথাযথভাবে প্রকাশ করা সম্ভব না।
এর আগে, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর ট্রাম্প বলেছিলেন—দেশতিকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয় ছিল।
তবে ইরান বলছে ভিন্ন কথা। তাদের মতে, ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে ঝুঁকেনি। তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি উদ্দেশ্যে ছিল শান্তিপূর্ণ, কোন ধরনের মরণাস্ত্র তৈরির জন্য নয়।