ঢাকা
১২ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ১০:২৪
logo
প্রকাশিত : জুন ১১, ২০২৫

ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে সংকটে নাসা, মহাকাশ গবেষণার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত?

বাংলার পুরোনো প্রবাদ আছে, ‘শিল-পাটার ঘষায় প্রাণ যায় মরিচের।’ এ প্রবাদ যেন হুবহু মিলে যায় বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিক ও প্রযুক্তি মহলের দুই ব্যক্তিত্ব ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের দ্বন্দ্বে। যেখানে ‘মরিচ’ হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রযুক্তি টাইকুন ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক বিবাদের রেশ গিয়ে পড়েছে মহাকাশ গবেষণার মতো স্পর্শকাতর খাতে। মাস্কের স্পেসএক্স বর্তমানে নাসার বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অংশীদার, বিশেষত মানুষ ও মালপত্র পাঠানোর একমাত্র নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসাবে কাজ করছে তার কোম্পানির ফ্যালকন ৯ রকেট। অথচ, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এসব সরকারি চুক্তি বাতিলের।

এদিকে, হোয়াইট হাউজের অনুরোধে কংগ্রেসে নাসার বাজেট কাটছাঁটের প্রস্তাব জমা পড়েছে। এ প্রস্তাব অনুযায়ী বিজ্ঞান গবেষণার জন্য বরাদ্দ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হতে পারে, যা এক ধাক্কায় ৪০টি মিশনের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ, গ্রহ অনুসন্ধান এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় পরিচালিত গবেষণাগুলোও এ প্রস্তাবের আওতায় আসছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দ্বন্দ্বে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ কর্মসূচি। ‘ওপেন ইউনিভার্সিটি’র মহাকাশবিজ্ঞানী ড. সিমিয়ন বারবারের মতে, ‘গত এক সপ্তাহে ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে যেসব কথাবার্তা ও হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা আমাদের মহাকাশ স্বপ্নকে নড়বড়ে করে দিচ্ছে।’

নাসা জানায়, বাজেট কমানোর প্রস্তাব এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহে মানব মিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো চালু থাকে। এমনকি ট্রাম্প প্রশাসন মঙ্গলে নভোচারী পাঠানোর জন্য ১০ কোটি ডলার বাড়তি বরাদ্দও দিয়েছে।

তবে মহাকাশ বিশ্লেষক ড. অ্যাডাম বেকার বলছেন, নাসাকে এখন ‘দুটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য’-চাঁদে চীনের আগে পৌঁছানো ও মঙ্গলে মার্কিন পতাকা বসানো-এই দুই উদ্দেশ্যেই সীমাবদ্ধ করা হচ্ছে। এর বাইরে গবেষণার গুরুত্ব কমে যাচ্ছে।

নাসার সমালোচকদের দাবি, সংস্থাটি এখন অগোছাল ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। তাদের ‘স্পেস লঞ্চ সিস্টেম’ (SLS) রকেটের প্রতি উৎক্ষেপণে ৪১০ কোটি ডলার খরচ হচ্ছে, যেখানে মাস্কের স্টারশিপ রকেটে খরচ হয় মাত্র ১০ কোটি ডলার। স্টারশিপের বড় সুবিধা, এটি পুনঃব্যবহারযোগ্য।

জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন কোম্পানিও ‘নিউ গ্লেন’ নামে একই ধরনের সাশ্রয়ী রকেট তৈরি করছে। হোয়াইট হাউজ চাইছে, ভবিষ্যতে এ নতুন প্রজন্মের রকেটগুলো এসএলএসের জায়গা নিক।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি মাস্ক বা বেজোস তাদের অর্থায়ন কমিয়ে দেন কিংবা সরকারি সহায়তা না পান, তবে এসব রকেটের ভবিষ্যৎ কী? ড. বারবার বলেন, ‘যদি স্পেসএক্স বা ব্লু অরিজিন তাদের উৎসাহ হারায় বা আরও অর্থ দাবি করে, তখন কংগ্রেসকে বাধ্য হয়ে সেই অর্থ দিতে হবে।’ এছাড়া আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বেও ছেদ পড়ছে। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত দুটি বড় মিশন এখন অনিশ্চিত। এর মধ্যে রয়েছে মঙ্গল গ্রহে প্রাচীন প্রাণের চিহ্ন খুঁজে বের করার মিশন ও পাথরের নমুনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram