শেরপুর প্রতিনিধি: সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. রেজাউল করিম হীরা (৯০) ও তার স্ত্রী সালমা খাতুন (৮০) কে শেরপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আখ্যায়িত করে বিচার দাবি করেন বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তবে হীরা বা তার স্ত্রীর নামে শেরপুর ও জামালপুর থানায় কোন মামলা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা তার জমি বিক্রির দলিল করে দিতে তার ব্যক্তিগত প্রাডো গাড়িযোগে স্ত্রী সালমা খাতুনসহ শেরপুর সদর সাবরেজিস্টার কার্যালয়ে আসেন। এসময় খবর পেয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা তাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। পরে তাকে ঘিরে বিক্ষোভ মিছিল এবং শাস্তির দাবি জানান তারা। ওইসময় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নিয়ামুল হাসান আনন্দসহ আরও বেশ কিছু দলীয় নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ তাদের আটক করে শেরপুর সদর থানায় নিয়ে যায়। গাড়িতে থাকা অবস্থায় বিক্ষুব্ধদের মিছিল থেকে সাবেক মন্ত্রী হীরাকে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করা হয়।
জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাইদুল ইসলাম সানী ও শহর শ্রমিক দলের সভাপতি মাছুদুর রহমান নয়ন বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর সাবেক ভূমিদস্যু রেজাউল করিম হীরা তার স্ত্রীসহ শেরপুর সদর সাব রেজিস্টার অফিসে জমি বিক্রির দলিল করতে আসেন। আমরা খবর পেয়ে স্থানীয় জনতাকে সাথে নিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ তুলে দেই। তারা তাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমাদের অর্থের প্রলোভনও দেখিয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের ফাঁদে পা দেইনি। আমরা এই ভূমিদস্যু আওয়ামী লীগ নেতার বিচার দাবি করছি।’
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাঈম হাসান উজ্জল বলেন, ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী হীরা বিগত আওয়ামী লীগ আমলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। সেই অবৈধ সম্পদ বিক্রি করে হয়তো দেশ ছাড়ার পায়তাঁরা করছিলেন তারা। আমরা তাদের আটক করে পুলিশে দিয়েছি। তাদের বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জুবায়দুল আলম জানান, খবর পেয়ে সাবরেজিস্ট্রি অফিস থেকে তাকে সস্ত্রীক থানায় আনা হয়েছে। তাদের নামে জামালপুর বা শেরপুর থানায় কোন মামলা নেই। এরপরও জামালপুর থানায় আমরা যোগাযোগ করা হচ্ছে।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম জানান, দেশের কোন থানায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী হীরার নামে মামলা রয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রেজাউল করিম হীরা আওয়ামী লীগের ১৯৯৬, ২০০৯ ও ২০১৪ সময়কালে জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৪ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি একসময় জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে উপদেষ্টা ছিলেন। তার স্ত্রী সালমা খাতুন জামালপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।