কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি: ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কালিন্দী ইউনিয়নে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর অফিসের পাশেই ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অফিস চলাকালীন সময় ময়লার ভাগারের দুর্গন্ধে অফিসে টেকা দায়। মশা-মাছির উপদ্রবসহ দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে অফিসের স্টাফসহ আশপাশের বাসিন্দারা।
আজ সোমবার (৩০ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পাশ ঘেঁষে ময়লা-আবর্জনার বিশাল ভাগাড় রয়েছে। কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে নষ্ট হওয়া শাকসবজি, হোটেলের পঁচা-বাসি খাবার, মুরগির নাড়িভুঁড়ি এবং বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও গরুর ভুঁড়িসহ সব ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই এগুলো পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে। উৎকট গন্ধের ফলে অফিসের কর্মচারীসহ রাস্তায় পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, অবর্জনার স্তূপ থেকে ছড়ানো উৎকট গন্ধে শিক্ষার্থী, মুসল্লি, ব্যবসায়ীসহ সড়কে চলাচলকারী হাজারো মানুষকে নাক চেপে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। আর বৃষ্টিতে ভিজে এবং রোদে শুকিয়ে এসব বর্জ্য পরিবেশের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সাহিদা আক্তার বলেন, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধের ফলে আমাদের অফিস করতে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। ময়লার দুর্গন্ধের কারণে অনেকে দুতলায় আসতে চায় না। ময়লার কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছে। সত্যি বলতে একটি অফিসের সামনে এমন ময়লার ভাগাড় মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমাদের বিদ্যুৎ অফিসের পাশ থেকে দ্রুত ময়লার ভাগাড় অপসারণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর কম্পিউটার অপারেটর নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অফিস রুমে বসা খুবই কষ্টের। মোট কথা আমরা যতক্ষণ অফিসে থাকি ততক্ষণ আমাদের দুর্গন্ধের মধ্যে কাটাতে হয়। দুর্গন্ধের ফলে বমি চলে আসে। এ রকম অবস্থা অনেক দিন থেকে চলছে। আমাদের এ দুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
ঢাকা পল্লী বিদুৎ সমিতি-৪ এর ই,সি মো: আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের অফিসের পাশেই এমন ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধে টেকা যায় না। তারপরও চাকরি করি যত কষ্টই হোক না কেন অফিস তো করতেই হবে। তবে মাঝে মধ্যেই আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। ময়লার স্তুপ থেকে যে দুর্গন্ধে শুধু আমরা না শুধু আশপাশের মানুষ ও বসবাস করছে অনেক কষ্টে। আমাদের দাবি আবাসিক এলাকা থেকে দূরে কোনো নির্জন স্থানে এই ময়লা-আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা করা উচিত।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর জেনারেল ম্যানেজার খালেদুর রহমান বলেন, খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলায় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দূষণের পাশাপাশি মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ায় রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়া আমরা এখানে অফিস করছি, আমাদের স্টাফরা ময়লার গন্ধে অফিসে বসে কাজে বিলম্ব হয়। শুধু আমাদের নয়, আশপাশের মানুষও চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এই গন্ধে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির মধ্যে পড়ছে। আমি উপজেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই যেন আমাদের অফিসের সামনে থেকে এই ময়লার ভাগাড় অপসারণ করে আমাদের সুস্থ ভাবে অফিস করার সুযোগ করে দেয়।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া বলেন, বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আবগত করেছি।