যশোর প্রতিনিধি: বৈধভাবে ছেলেকে ইতালিতে পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে ৩৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন যশোরের এক ভুক্তভোগী। প্রতারণার মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাৎ এবং টাকা ফেরত চাইলে হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে শনিবার (৩১ মে) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেন বাঘারপাড়া উপজেলার তৈলধান্যপুড়া গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে শরিফুল ইসলামের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার শ্বশুর মো. শাহাদত হোসেন।
বক্তব্যে বলা হয়, শরিফুল ইসলামের ছেলে মো. শাহেদ আহম্মেদকে ইতালিতে ভালো বেতনের চাকরির কথা বলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা ১৬ লাখ টাকায় চুক্তি করেন। এরপর জমি বিক্রি, সুদে ধার ও সহায়-সম্বল বিক্রি করে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ধাপে ধাপে টাকা পরিশোধ করেন শরিফুল।
চুক্তি অনুযায়ী ইতালিতে পাঠানোর কথা থাকলেও প্রতারকরা শাহেদকে প্রথমে দুবাই, সেখান থেকে কেনিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা হয়ে কাজাখস্তানে পাঠান। কাজাখস্তানে পুলিশ আটক করলে চক্রের সদস্য আলমগীর হোসেন মুক্তিপণের মাধ্যমে তাকে ছাড়িয়ে নেন। এরপর শাহেদকে লিবিয়ায় নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে আরও দফায় দফায় মোট ২০ লাখ টাকা দাবি করেন তারা।
বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, সব মিলিয়ে শরিফুল ইসলামের কাছ থেকে প্রতারকরা মোট ৩৬ লাখ টাকা আদায় করে। পরে শাহেদকে দেশে ফেরত পাঠানো হলেও টাকাগুলো ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে এবং শেষমেশ প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় শরিফুল ইসলাম বাঘারপাড়া আমলী আদালতে একটি মামলা করেছেন (সি আর মামলা নং ২৪৫/২৫, তারিখ ২২/০৫/২০২৫)। মামলায় বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইন ২০১৩ এর পাশাপাশি দণ্ডবিধির একাধিক ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হচ্ছে একই গ্রামের মোঃ নাজমুল হাসান বিপ্লব,বিপ্লবের পিতা হায়দার আলী (৬৮) স্ত্রী কাকলী বেগম (৩৫),বাঘারপাড়া উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মোঃ আলমগীর হোসেন (৪০)সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪
সংবাদ সম্মেলনে শরিফুল ইসলামের পক্ষে তার শ্বশুর আদালতের সুদৃষ্টি কামনা করে প্রতারকদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা এবং আত্মসাৎ করা ৩৬ লাখ টাকা ফেরতের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শরিফুল ইসলাম, তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম, ভাই রবিউল ইসলাম, মামা আজিজুল হক, আলতাব হোসেন, জামির হোসেন এবং বিদেশফেরত ভুক্তভোগী ছেলে শাহেদ আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।