শহিদ জয়, যশোর: যশোর-নড়াইল সড়কে পুলিশ পরিচয়ে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার (২৮ মে) বিকেলে বাঘারপাড়া উপজেলার রুস্তমপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। প্রাইভেটকার থামিয়ে চালক ও যাত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় ডাকাতেরা। পরে মারধর করে পাঁচ লাখ টাকার বেশি লুটপাট করে তারা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী চালক আব্দুর রাজ্জাক যশোর সদর উপজেলার ঝুমঝুমপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি জানান, গোপালগঞ্জ জেলা থেকে যাত্রী পিয়াস আহমেদকে নিয়ে যশোরে ফিরছিলেন। পিয়াস আহমেদ যশোর শহরের আর এন রোডের রাঙ্গামাটি গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে রুস্তমপুর এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকার এসে পথরোধ করে। ১০-১২ জন সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তি ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে বলেন, গাড়িতে অবৈধ মালামাল আছে, তল্লাশি করতে হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পরনে পুলিশের স্টিকারযুক্ত পোশাক ছিল, কারও কোমরে হ্যান্ডকাফ ঝুলছিল। তারা চালক ও যাত্রীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাশে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাদের মারধর করা হয় এবং জমি বিক্রির টাকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
যাত্রী পিয়াস আহমেদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রাইভেট কার চালক রাজ্জাক জানান, তাদের কাছ থেকে মোট ৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতেরা। এর মধ্যে পিয়াস আহমেদের কাছ থেকে ৪ লাখ ২০ হাজার এবং আমার কাছে থেকে ৭৩ হাজার টাকা ছিল ।যা তিনি কোরবানির গরু কেনার জন্য সঙ্গে রেখেছিলেন।
ডাকাতদের হামলায় আহত পিয়াস ও রাজ্জাক যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের ভাষ্য মতে, ডাকাতদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে, তারা যশোর অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছিল এবং পুলিশ সেজে ভয়ভীতি দেখিয়ে ডাকাতি করে। ডাকাতি শেষে তারা নড়াইলের দিকে গাড়ি নিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, “ঘটনাটি বাঘারপাড়া থানার আওতাধীন। অভিযোগ সেখানে দাখিল করতে হবে।” তবে বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ না করে কেটে দেন।
ঘটনার এলাকাটির যশোর-নড়াইল সড়কের অন্তর্গত হওয়ায় নড়াইলের তুলারামপুর হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শেখ সেকেন্দার আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি এক সপ্তাহ আগে এখানে যোগদান করেছি। এ ধরনের ঘটনার খবর এই প্রথম শুনছি। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও ওই সড়কে একাধিকবার পুলিশের পরিচয়ে একই ধরনের ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।