মোঃ এনামুল হক, মোংলা প্রতিনিধি: মানুষ হিসেবে আমাদের টিকে থাকার জন্য উচিত হবে পৃথিবীর সকল প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণ করা। কোন সৃষ্টি যেন হারিয়ে না যায়। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে উদ্ভিদ ও প্রাণীর সংরক্ষণ জরুরি। সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ ছিলো প্রকৃতিনির্ভর জীব। মহাপ্রাণ সুন্দরবনসহ উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ ও প্রয়াসের কোন বিকল্প নেই।
বুধবার (২৮ মে) সকালে মোংলা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে বিশেষ অবদান রাখায় সবুজ সাথী সম্মাননা প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত পরিবেশ সমাবেশে বক্তারা একথা বলেন। জলবায়ু ও পরিবেশবাদী জাতীয় সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে এ পরিবেশ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বুধবার সকাল ১১টায় সবুজ সাথী সম্মাননা উপলক্ষে আয়োজিত পরিবেশ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার সুমী। সংবর্ধিত সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র সদস্য খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জেল সোহেল, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ, উপজেলা কৃষি অফিসার প্রশান্ত কুমার হাওলাদার, মংলা টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম, বৃক্ষপ্রেমিক সবুজ অভিভাবক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস ও কবি আফরোজা হীরা। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণীশান্তা কৃষিজমি রক্ষা আন্দোলনের নেতা বিশ্বজিৎ মন্ডল, ইস্রাফিল বয়াতি, আব্দুর রশিদ হাওলাদার, কমলা সরকার, হাছিব সরদার, মেহেদী হাসান, ইয়ুথ ফর সুন্দরবন ফোরামের লিডার মোহাম্মদ শাহীন খলিফা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার সুমী বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশ-প্রকৃতি সংরক্ষণকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। মোংলা সুন্দরবনের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় এখানে আইন ও নীতিমালা পরিপন্থী কোন কর্মকান্ড মেনে নেয়া হবেনা। বৃক্ষরোপণ ও পরিবেশ সংরক্ষণে মোংলায়
এবছর সবুজ সাথী সম্মাননা প্রদান করা হয় মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানীকে। সবুজ সাথী সম্মাননা প্রাপ্ত সম্মানিত অতিথি প্রফেসর কে এম রব্বানী বলেন, বৃক্ষপ্রেম আমাদের সামাজিক শিক্ষা। আমরা মা-বাবা, দাদা-দাদীদের কাছ থেকে সহজাতভাবেই এই প্রেম শিখে বড় হয়েছি। উদ্ভিদ রোপণের ক্ষেত্রে আমাদের উচিত পশু-পাখিদের খাবার এবং বাসস্থানের সংস্থান হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা।
সভাপতির বক্তব্যে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর সদস্য সচিব ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র সমন্বয়কারী শরীফ জামিল বলেন, পরিবেশ বিপর্যয় মারাত্মক আকার ধারণ করলেও বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছেন পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখা অনেক মহান ব্যক্তিত্ব। সমাজের সামনে এইসব ভালো উদাহরণসমূহ তুলে ধরতে পারলে পরিবেশ রক্ষায় মানুষ এগিয়ে আসতে উৎসাহিত হবে। মহাপ্রাণ সুন্দরবনসহ উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ ও প্রয়াসের কোন বিকল্প নেই। তিনি সুন্দরবন বিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবিলম্বে বন্ধ করে দেয়ার জোর দাবি জানান।