চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে উপজেলার চিলমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসেছে গরুর হাট। গরু-মহিষের পায়ে পিষ্ট হয়ে নষ্ট হতে পারে মাঠ, এমন আশঙ্কা করছেন উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে নষ্ট হবে পুরো মাঠের খেলার পরিবেশও। এ নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিবছর ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে চিলমারী সরকারি কলেজ মাঠে বিশাল পশুর হাট বসে। তবে গত বছর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সেটি প্রচারিত হলে উপজেলা প্রশাসন হাটটি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এ বছর উপজেলা বিএনপি'র মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও হাট ইজারাদার জেয়ারা খাতুন রোজি তার দাপট দেখিয়ে অনুমতি ছাড়াই চিলমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গরুর হাট বসিয়েছেন। তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থেকেও উপজেলা বিএনপির মহিলা দলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হাট ইজারা নেয়াসহ এসব কাজ করে আসছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মাঠে গরু-ছাগল, মহিষসহ প্রায় কয়েকশ গবাদিপশু বিক্রির জন্য বেঁধে রাখার খুটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে গরুর পায়ের আঘাতে নষ্ট হচ্ছে মাঠের ঘাস, মলমূত্রেও নষ্ট হচ্ছে মাঠ। এই হাট আজ বিকাল থেকে বসবে বলে জানিয়েছেন হাট কর্তৃপক্ষ। এসময় ক্রান্তি শর্মা, সুরাইয়া খাতুন, মনিসহ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সামনে খেলার মাঠে এই গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে। বর্ষার মৌসুম হওয়ায় মাঠে সারাক্ষণ কাদা জমে থাকে। সবেমাত্র আমাদের মাঠে মাটি ভরাট করে সংস্কার করা হচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত মাঠে খেলতে পারি নাই কিন্তু এর মধ্যে শুনতেছি যে মাঠে গরুর হাট হবে। আমরা চাই এই গরুর হাট বন্ধ হোক। আমাদের মাঠে গরুর হাট চলবে না। গরুর হাটের কারণে বিদ্যালয়ের একমাত্র খেলার মাঠটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
বিদ্যালয়ে গরুর হাটের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেত্রী ও হাট ইজারাদার জেয়ারা খাতুন রোজি জানিয়েছে, আপনাদের সাথে(সাংবাদিক) সাক্ষাৎ এ কথা বলতে হবে। সব বিষয়ে আপনারা যদি অনুমতি এটাসেটা চান এগলা তো লোকাল।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান সাজু জানান, আমি বিদ্যালয়ে গরুর হাটের অনুমতি দেইনি। তবে হাটের বিষয়ে ইউএনও'র সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি হ্যাঁও বলেননি নাও বলেননি। শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে ইউএনও'র কাছে অভিযোগ দিতে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সবুজ কুমার বসাক বলেন, হাট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন ধরনের লিখিত আবেদন পাইনি। তাছাড়া আমি হাট বসানোর অনুমতি প্রদান করিনি।