জিহাদ রানা, বরিশাল ব্যুরো চীফ: ৯ দফা দাবি আদায়ে শনিবার থেকে শিক্ষার্থীদের ডাকা একাডেমিক শাটডাউনে অচল হয়ে পড়েছে বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ফলে অন্যান্য দিনের মতো শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশ নেননি। তারা বিক্ষোভ সমাবেশ, প্রতিবাদী নাটক-গান মঞ্চস্থ করেছে। শিক্ষক-কর্মচারীরাও মৌন সম্মতি জানিয়ে বন্ধ রেখেছে পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম। ফলে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকার পাশাপাশি কার্যত বন্ধ রয়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রমও।
এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। অবিলম্বে দাবিগুলো মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এর আগে শনিবার চার ঘণ্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা শাটডাউনের ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থী এনামুল হোসেন ইরান বলেন, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার কারণে কয়েকদিন আগে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী ধ্রবজিৎ কর্মকারকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর সে আত্মহত্যা করে। কম্পাইন্ড সিস্টেমে পরীক্ষার কারণে সে চাপ সামাল দিতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছে।
শিক্ষার্থী শুভ সরকার বলেন, ২০১৬ সালের পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত প্রযুক্তি ইউনিটের অধীন সকল কলেজ ও ইনস্টিটিউটে বিদ্যমান ‘কম্বাইন্ড পরীক্ষা পদ্ধতি’ সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এছাড়া গুণগত শিক্ষা ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করা হয়নি।
এই কম্বাইন্ড একাডেমিক সিস্টেমের জটিলতার কারণে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে একাডেমিক ও মানসিক ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে। বিশেষ করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ণে অবহেলা এবং অযৌক্তিক মডারেশনের ফলে প্রায়শই সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয় এবং ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব সৃষ্টি হচ্ছে। স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ডিপার্টমেন্টগুলোর জন্য আলাদা আলাদা পরীক্ষা কমিটি গঠনসহ ৯ দাবি মেনে নেয়ার আহবান জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- পরীক্ষার সময়সূচি স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আলাদা হতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে। প্রশ্নপত্র মুদ্রণ ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকেই পরিচালিত হতে হবে।
গ্রেডিংয়ে স্বচ্ছতা ও নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদের আচরণে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখাসহ প্রশ্নপত্র অবশ্যই পাঠ্যসূচির মধ্য থেকে করতে হবে। দ্রুত ফলাফল ঘোষণা নিশ্চিতে ট্যাবুলেশন ও গ্রেডিং কার্যক্রম স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট পর্যায়ে একজন পরীক্ষা সমন্বয়ক নিয়োগের দাবি জানান তারা।