এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ও ছোটভাকলা ইউনিয়নের পদ্মানদী থেকে ২দিনে দু'টি লাশ উদ্বার করেছে থানা পুলিশ। এ নিয়ে জনমনে আতংক বিরাজ করছে। অবশ্য পুলিশ বলছে, এতে জনগণের ভয়ের কোন কারণ নাই। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ সস্ত্রাসীদের খুঁজে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে ঘটনা পদ্মার দুর্গম চরাঞ্চলের পাবনা ও রাজবাড়ীর মধ্যে ঘটায় ওই সস্ত্রাসীদের খুঁজতে সময় লাগছে। এলাকায় পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছ।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের চর বরাট গ্রামের জিহাদ সরদার (৩০) নিখোঁজের তিনদিন পর আজ রোববার বরাট অন্তার মোড় এলাকায় পদ্মা নদী থেকে জিহাদের মাথাবিহীন অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জিহাদ সরদার চরবরাট গ্রামের শহীদ সরদারের ছেলে। জিহাদ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে ডকইয়ার্ডে কাজ করতেন। পরিবারে তারা দুই ভাই ও দুই বোন ছিলেন।
জানা যায়, উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের অন্তার মোড়ের চরবরাট এলাকায় পদ্মানদীর কিনারে রবিবার সকালে স্থানীয় লোকজন মাথাবিহীন একটি লাশ পানিতে ভাসতে দেখে গোয়ালন্দ ঘাট থানাকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় নদীতে তার মাথাটি কোথায় আছে সেটি খুঁজছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, অন্তার মোড়ে এলাকায় পানিতে ভাসছে মাথাবিহীন একটি লাশ এমন খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। তিনি আরও জানান, লাশটি জিহাদের কিনা তা শনাক্তকরণের কাজ চলছে এবং এ ঘটনায় কারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে মাঠে পুলিশ কাজ করছে।
জিহাদের ছোট বোন সামান্তা আক্তার বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা থেকে বাড়ি আসে জিহাদ। বিকালে জিহাদ তার ব্যক্তিগত কাজে বাইরে গেলে রাত বেশি হলে বাড়ি না আসায় তাকে ফোন দিলে জিহাদ বলে আমি কিছুক্ষণ পর আসছি। পরে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পার হয়ে গেলেও জিহাদ বাড়ি না ফিরলে তারা তাকে ফোন করলে তার ফোনটি বন্ধ পায়। পরদিন দুপুরে গোয়ালন্দ ঘাট থানার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি নিখোঁজ জিডি করা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জিহাদকে না পাওয়া গেলে রবিবার সকালে অন্তার মোড় এলাকার পানিতে মাথা ছাড়া আমার ভাইকে অর্ধগলিত অবস্থায় ভাসমান থাকতে দেখা যায়। পরে আমার মা গিয়ে ভাইয়ের পরনে থাকা প্যান্ট দেখে শনাক্ত করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়ের তো কোনও শত্রু ছিল না। কারা আমার ভাইকে এভাবে মারলো জানি না। আমরা অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই।’
এর আগে গত শুক্রবার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার রাখালগাছি গ্রামে বিয়ের কনে দেখতে এসে চরমপন্থি সস্ত্রাসীদের উপর্যুপরি কোপ খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয় আল আমিন (২৫) নামের এক মালয়েশিয়া প্রবাসী।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার সময় গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের রাখালগাছি সিএন্ডবি রাস্তার মাথায় এ ঘটনা ঘটে। এর একদিন পর গত শনিবার আল আমিন (২৩) এর মরদেহ উদ্ধার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা, কাজিরহাট নৌ-পুলিশ। আল আমিন পাবনা জেলার আমিনপুর থানার ঢালারচর ইউনিয়নের রামনারায়নপুর গ্রামের আবু বক্কর মন্ডলের ছেলে। শনিবার দুপুরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।