হুমায়ূন কবীর রিন্টু, নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলের কালিয়ায় ৬ বছরের শিশুকন্যা হামিদা হত্যা মামলায় স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের ক্লু উদ্ধারে পুলিশ আলামত হিসেবে চিরকুট ও মোবাইল ফোন জব্দ করেছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নড়াগাতি থানার ওসি শরীফুল ইসলাম জানান, সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারের পর হামিদা হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনের দ্বারপ্রান্তে। হত্যাকান্ডের শিকার শিশু হামিদা কালিয়া উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের শাহানুর শেখের মেয়ে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- প্রতিবেশী রবিউল সিকদার (৩৭), তার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৩৪), মেয়ে সুমী খানম (১৪) এবং সুলতানা বেগম (৩৫)।
এ মামলার এজাহার ও নিহতের স্বজন সূত্রে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক শাহানুরের সাথে প্রতিবেশীদের পারিবারিক বিরোধ ও দ্বন্দ্ব ছিল। বিরোধের জেরে শাহানুরের বাড়িতে কয়েকবার অগ্নিসংযোগ এবং সন্তানদের খুন-জখমের হুমকি দেয়া হয়। তিন সন্তানের মধ্যে একজনকে খুন করা হবে বলে চিরকুট লিখে শাহানুরের বাড়িতে ফেলা হয়। গত ১৪ নভেম্বর দুপুরে শাহানুরের ছোট মেয়ে হামিদা বাড়ির বাইরে খেলা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে দুই হাত বাঁধা অবস্থায় রবিউল সিকদারের চাষাবাদ করা ধানী জমির পাশে কচুরিপানা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় প্রতিবেশী তোতা সিকদার, স্ত্রী সুলতানা বেগম, ছেলে ফেরদৌস সিকদারসহ ৬ জনকে আসামি করে ১৫ নভেম্বর উপজেলার নড়াগাতি থানায় মামলা দায়ের হয়। ঘটনার পর পুলিশ হামিদা হত্যাকান্ডের ক্লু বের করতে তৎপর হয়। শাহানুরের স্ত্রী হাওয়া বেগমের হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন ও হাতে লেখা কয়েকটি চিরকুট জব্দের পর পুলিশ এজাহারভুক্ত নারী আসামি সুলতানা বেগমকে গ্রেফতার করে। একই সাথে প্রতিবেশী দম্পতি এবং তাদের মেয়েকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ হত্যার বিষয়ে শাহানুরের স্ত্রী হাওয়া বেগম ও স্বজনরা জানান, খুনের হুমকি দিয়ে তাদের বাড়িতে ফেলা চিরকুটগুলো রবিউলের মেয়ে সুমী খানমের লেখা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আমার শিশুকন্যা খুনের সাথে সুমী ও তাদের পরিবারের লোকজন জড়িত থাকতে পারে। আমার মেয়ের খুনের সাথে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
উপজেলার নড়াগাতি থানার ওসি শরীফুল ইসলাম জানান, মামলাটি তদন্তাধীন। এ মামলায় একজন এজাহারভুক্ত নারী আসামিকে গ্রেফতার ও সন্দেহভাজন রবিউল, তার স্ত্রী এবং মেয়েকে আটক করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই খুনের রহস্য উন্মোচিত হবে।