ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ত্রিশালে আউলটিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষায় শূণ্য অবস্থায় পাঠদান কার্যক্রম করে আসছেন। ১৪জন শিক্ষক-কর্মচারীর বিপরীতে শিক্ষার্থী আছে ৬জন। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষকের চেয়ে শিক্ষার্থী কম হওয়ায় শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সচেতন মহলে।
জানা যায়, ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় উপজেলার সদর ইউনিয়নের আউলটিয়া গ্রামে আউলটিয়া দাখিল মাদ্রাসা। এ গ্রামের একমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এটি। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ভাল থাকলেও নানা অনিয়ম, দূনীর্তি ও জটিলতার কারণে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থী কমতে থাকে। ২ হাজার সালে মাদ্রাসাটি এমপিওভূক্ত হলেও প্রতিষ্ঠানটি হলেও এখানে কোন সরকারি ভবন নির্মাণ হয়নি। ২টি টিনসেট ঘরে চলে শিক্ষা কার্যক্রম। অধিকাংশ রুমে দরজা-জানালা ভাল না থাকায় সেখানে দিনের বেলায় গরু-ছাগল ঢুকে পরে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আউলটিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ২টি টিনসেট ঘরে চলে শিক্ষা কার্যক্রম। প্রথম শ্রেণি থেকে দাখিল পর্যন্ত মোট ১০টি শ্রেণিতে ৬জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করছেন ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী। প্রতিষ্ঠানটিতে একাধিকবার যাওয়া হলেও একই রকম শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
আরও জানা যায়, শিক্ষকরা হাজিরা দিয়েই চলে যান বলে অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কাগজে কলমে ১৬০জন শিক্ষার্থী রয়েছে দাবী করা হলেও বাস্তবে ১০জন শিক্ষার্থী নেই বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। বার্ষিক পরীক্ষায় মোট উপস্থিত ছিল ৪জন। অথচ মাদ্রাসায় শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন ১৪জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্র অভিভাবক বলেন, এখানে পড়ালেখা হয় না। শিক্ষকরা আসেন আর চলে যান। পড়ালেখা করানোর জন্য যে সব উপকরণ ও অবকাঠামো দরকার কোনটিই নেই এ মাদ্রাসায়। দাখিল পরীক্ষার সময় কিছু শিক্ষার্থীকে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে এনে পরীক্ষা দেওয়ানো হয়। মাদ্রাসা সুপার শিক্ষার্থীদের নকল সরবরাহ ও নানা অনিয়মের কারণে একাধিকবার আটক ও বরখাস্ত হয়েছিলেন। পরে আবার মাদ্রাসায় যোগ দেন।
মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখার শিক্ষক মো. আব্দুর রশিদ জানান, আমাদের মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী কমে গেছে। বর্তমানে কাগজে কলমে ১৬০জন শিক্ষার্থী থাকলেও তারা অধিকাংশ মাদ্রাসায় আসে না। এ বছর দাখিল পরীক্ষায় ৬জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৩জন পাশ করেছে। আমরা শিক্ষার্থী বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. সাইফুল মালেক সিদ্দিকী জানান, মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী কম থাকায় নিয়মিত ক্লাশ হচ্ছে না। যেসব ক্লাশে শিক্ষার্থী আসে তাদের ক্লাশ হয়। শিক্ষার্থী না থাকায় মাদ্রাসা চালানো কষ্টকর হয়ে গেছে। শিক্ষার্থী না থাকায় সহ-সুপার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন লুৎফর রহমান জাহাঙ্গীর।