বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক থেকে জুন প্রান্তিক পর্যন্ত শেষ তিন মাসে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যার বড় অংশই গেছে সরকারি খাতে। জুন প্রান্তিক শেষে সরকারি ও বেসরকারি খাত মিলিয়ে মোট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়িয়েছে ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। মার্চ প্রান্তিকে এ ঋণের পরিমাণ ছিল ১০৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। এই সময়ে সরকারি খাতে ঋণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লেও, বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ কমেছে ১১০ মিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি), জাপান ও ওপেক ফান্ডসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছে। মূলত উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে অর্থ ছাড়ই সরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ বৃদ্ধির মূল কারণ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ এর বড় অংশই বরাদ্দ হয় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে। যদি এ অর্থ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি বা রাজস্ব আদায়ে ভূমিকা রাখতে না পারে, তবে তা সুফল না দিয়ে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভসুদের হার কমিয়েছে ২৫ বেসিস পয়েন্ট। এর ফলে নীতি সুদহার নেমে এসেছে ৪ থেকে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে। এটি গত বছরের ডিসেম্বরের পর প্রথম সুদহার হ্রাস। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, 'এর ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণ তুলনামূলক কম সুদে পরিশোধের সুযোগ পেতে পারে।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন প্রান্তিক শেষে বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা মার্চে ছিল ১৯ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ তিন মাসে ঋণ কমেছে ১১০ মিলিয়ন ডলার। এতে বোঝা যায়, নতুন ঋণ নেওয়ার চেয়ে পরিশোধের পরিমাণ ছিল বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, টাকার মান ডলারের বিপরীতে কমে যাওয়ায় অনেক ব্যবসার খরচ বেড়েছে। ফলে বেসরকারি খাতের অনেকে এখন বিদেশি ঋণ নিতে চাইছেন না।