২৫ জুন ২০২৫ মরহুম মন্ত্রী কর্নেল (অব:) আকবর হোসেন বীর প্রতীক এর ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৬ সালে ২৫ জুন নৌপরিবহন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে তিনি আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকা উত্তরার ৫নং সেক্টর, রোড ৪/এ, ২৪ নং বাসভবনে কোরআনখানি ও দোয়া মোনাজাত, কুমিল্লা জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে কান্দিরপার জামে মসজিদে দোয়া মোনাজাত, লাকসাম মনোহরগন্জের চিতষী কর্নেল আকবর হোসেনের সমাধীতে কুমিল্লা জেলা ও লাকসাম উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বীর প্রতীক আকবর হোসেন (জন্ম ১৮ জানুয়ারি ১৯৪১-মৃত্যু ২৫ জুন ২০০৬) ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রাজনীতিবিদ। তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রী, পরিবেশ ও বন মন্ত্রী এবং পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ৫ বার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর আকবর হোসেন রাজনীতিতে জড়িত হন এবং ১৯৭৪ সালের জানুয়ারিতে ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি) গঠনে সহায়তা করেন। তিনি ইউপিপির সহ-সভাপতি হন। ১৯৭৭ সালে, ইউপিপি জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের সাথে একীভূত হয়, আকবর হোসেন দল ত্যাগ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তে যোগ দেন এবং বিএনপি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাকে প্রথমে বিশেষ সম্পাদক করা হয় এবং পরে যুগ্ম মহাসচিবের পদে অধিষ্ঠিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিএনপির সহ-সভাপতি এবং কুমিল্লা জেলা বিএনপির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বলিষ্ঠ কন্ঠের অধিকারী বাগ্মী হিসেবে দেশ ও জাতির স্বার্থে পার্লামেন্টে ঐতিহাসিক বক্তব্য রাখেন এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও রাজনৈতিক ভাষ্য ও সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। তিনি জহির রায়হানকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন ‘অবুঝ মন ‘ও ‘সোনার কাজল’। নৃত্যশিল্পী ছিলেন এবং বংলাদেশ বুলবুল ললিতকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করছিলেন। গ্রন্থ রচনা করেছেন, ‘ভিক্ষুক কোনদিন বড়লোক হয়না গরিব বড়লোক হয়’,’শহীদ জিয়া ও আমি’এবং নজরুল ইসলাম মিশা সম্পাদিত কর্নেল আকবর হোসেন বীরপ্রতীক মুক্তিযুদ্ধে সংসদে সংবাদপত্রে।
আকবর হোসেন ১৯৭৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। এ সময় জাপানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বাংলাদেশ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়। তিন বিঘা করিডোর, ফারাক্কা ও চাকমা সমস্যা সমাধানের নিমিত্তে গঠিত কমিটির তিনি সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সালের অক্টোবরে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী এবং ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। আকবর হোসেন ১৯৯৩ সালের অক্টোবরে নেদারল্যান্ডে উপকূলবর্তী অঞ্চল বিষয়ক সম্মেলন, ১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বরে জেনেভায় বর্জ্য পদার্থ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং ১৯৯৫ সালের নভেম্বরে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশসমূহের পরিবেশ উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে যোগদান করেন এবং এ সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।