ঢাকা
২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১:৪১
logo
প্রকাশিত : মার্চ ১৭, ২০২৫

বেনামি প্রতিষ্ঠানে খেলাপি গ্রাহককে এলসি সুবিধা

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নামসর্বস্ব নতুন একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ২৫ লাখ ডলারের (প্রায় ৩১ কোটি টাকা) আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খুলেছে (নন-ফান্ডেড ঋণ সুবিধা) বেসরকারি এবি ব্যাংক পিএলসি। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষকের আপত্তিও আমলে নেওয়া হয়নি। উপরন্তু এই গ্রাহকের এলসি খোলার ক্ষেত্রে অভিনব কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে ব্যাংকটি। প্রথমবার এলসি খোলার প্রস্তাব কেন্দ্রীয় ব্যাংক নাকচ করলেও দ্বিতীয় দফায় নিজস্ব ক্ষমতায় তা অনুমোদন করেন ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান। আবার এলসি খোলার মাত্র দ্ইু দিনের মধ্যেই পণ্য দেশে এসেছে, যা রহস্যজনক। অন্যদিকে, নামসর্বস্ব এই প্রতিষ্ঠানটির অফিসের ঠিকানা এবং ওই ব্যাংকের আরেক খেলাপি প্রতিষ্ঠানের অফিসের ঠিকানা একই। ফলে আলোচ্য প্রতিষ্ঠানটি ওই খেলাপি গ্রাহকের বেনামি প্রতিষ্ঠান বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এসব বেনামি প্রতিষ্ঠানের অন্তরালে থাকা ব্যক্তিটি হলেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) দল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের মালিক সেলিম চৌধুরী, যিনি কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি। এ ছাড়া বিদেশি যে প্রতিষ্ঠানটি থেকে পণ্য আমদানি করা হয়েছে, তার মালিকও এই সেলিম চৌধুরী। এখানে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক একই ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান হওয়ায় পুরো অর্থই বিদেশে পাচারের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে এ চাঞ্চল্যকর অনিয়মের বিষয়ে তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ রকম অসচ্ছল ও নতুন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এত বড় এলসি সুবিধা কেন দেওয়া হয়েছে, তারও ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও এবি ব্যাংকে সন্দেহজনক ঋণের নামে অর্থ লুটপাট বন্ধ হয়নি। এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার পরামর্শ দেন তারা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এবি ব্যাংকের গুলশান শাখার ওই গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স ইনফিনিট হরিজন করপোরেশন। ঋণের নথিপত্রে এই প্রতিষ্ঠনের মালিক হিসেবে দেখানো হয়েছে মো. আবু নোমান নামের এক ব্যক্তিকে। নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ইনফিনিট হরিজন করপোরেশন একেবারেই নতুন প্রতিষ্ঠান, যার নিট সম্পদের মূল্য মাত্র ২৭ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়িক লাইসেন্স পায়। আর আমদানি নিবন্ধন সনদপত্র (আইআরসি) ইস্যু করা হয় ১৭ অক্টোবর। এরপর ২৮ অক্টোবর এবি ব্যাংকের গুলশান শাখায় আলোচ্য গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্টার্ড অফিসের ঠিকানা-এমএস টাওয়ার হেমলেট (হ্যামলেট), সপ্তম তলা, ১৬ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা।

একই ঠিকানায় সংশ্লিষ্ট ফ্লোরে ওই শাখার আরেক খেলাপি গ্রাহকের অফিস। গত ২৩ নভেম্বর ব্যাংকটির গুলশান শাখা গ্রাককের অফিস পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠায়। এতে উল্লেখ করা হয়, আলোচ্য গ্রাহকের অফিস এবং ব্যাংকটির গুলশান শাখার বিদ্যমান গ্রাহক গ্লোবাল করপোরেশন এবং বিএন্ডসি করপোরেশনের অফিসের ঠিকানা একই। এর মধ্যে গ্লোবাল করপোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানের কাছে বর্তমানে ব্যাংকটির ঋণ রয়েছে ২৩২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ফান্ডেড ১৬৬ কোটি ৬৮ লাখ এবং নন-ফান্ডেড ৬৫ কোটি ৮৪ লাখ। অপর গ্রাহক বিঅ্যান্ডসি করপোরেশনের কাছে ফোর্সড ঋণ রয়েছে ৫৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আর স্বীকৃত বিলের পাওনা বাবদ ঋণ আছে ১৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে এসব ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ ও খেলাপির খাতায় উঠেছে।

সূত্র বলেছে, দেশের প্রথম প্রজন্মের এই ব্যাংকটি একসময় অন্যতম সেরা ব্যাংক হয়ে উঠেছিল। পরে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির কারণে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকলেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর এক চিঠিতে নতুন ঋণ বিতরণ ও এলসি খোলায় কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই চিঠিতে বলা হয়- বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত সিআরআর ও এসএলআর ঘাটতি, ঋণ-আমানত অনুপাত নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি, নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন ঋণাত্মক হয়ে পড়া এবং রেমিট্যান্স আহরণে প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ না হওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত জামানতবিহীন নতুন কোনো ঋণ অনুমোদন না করার জন্য ব্যাংকটিতে নির্দেশনা প্রদান করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগ।

এর আগে ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগ থেকে কৃষি ও সিএমএসএমই ছাড়া অন্য সব ঋণ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ওই সময় এবি ব্যাংক পিএলসির গুলশান শাখার ওপর পরিচালিত ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিলভিত্তিক বৈদেশিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন সংক্রান্ত বিশদ পরিদর্শনে উদ্ধৃতি দিয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়- আপনাদের ব্যাংকের গুলশান শাখার কৃষি ঋণ ও সিএমএসএমই ঋণ ব্যতীত সকল প্রকার ঋণ প্রদান আপাতত স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া গ্লোবাল করপোরেশনসহ ১২ গ্রাহককে নতুন করে কোনো ঋণ প্রদান করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকার পরও সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের অনুকূলে এলসি সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

মানা হয়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা : প্রথমবার গত ৯ জানুয়ারি ইনফিনিট হরিজন করপোরেশনের নামে ৩০.১০ লাখ ডলারের (প্রায় ৩৮.৫২ কোটি টাকা) ছোলা আমদানির ঋণপত্র স্থাপনের প্রস্তাব ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের ৮০৪তম সভায় উপস্থাপন করা হয়। তখন এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগকৃত পর্যবেক্ষক আপত্তি জানিয়ে পর্যবেক্ষণে বলেন, নতুন গ্রাহকের অনুকূলে শতভাগ জামানতবিহীন বা শতভাগ মার্জিন ব্যতীত ঋণসুবিধা প্রদান না করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ এবং ১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখের পত্রে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এর ব্যত্যয় করে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়েছে বিধায় তা অনুমোদনযোগ্য নয়। এ ছাড়া ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ১০৯(৭) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালন না করা দ-নীয় অপরাধ। ভবিষ্যতে এ ধরনের ব্যত্যয় থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দেন তিনি। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনাপত্তি সাপেক্ষে ওই প্রস্তাব অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে প্রস্তাবটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর পর সবকিছু বিবেচনায় নাকচ করে দেওয়া হয়।

ক্ষমতার অপব্যবহার ও অভিনব কৌশলের আশ্রয় : বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এলসি প্রস্তাবটি অনুমোদনের প্রস্তাব নাকচের পর নিয়ম লঙ্ঘন করে একজন ডেপুটি গভর্নর বরাবর আবেদন ও তদবির করেন ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত এমডি। নিয়মানুযায়ী, এ ধরনের আবেদন সরাসরি গভর্নর অথবা সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিচালক বরাবর করতে হয়। এমন সাহস দেখানোয় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এমডিকে সতর্ক করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যেই কৌশলে নিজস্ব ক্ষমতায় শতভাগ মার্জিন দেখিয়ে আলোচ্য গ্রাহকের অনুকূলে ২৫ লাখ ডলারের (প্রায় ৩১ কোটি টাকা) এলসি খোলার প্রস্তাব অনুমোদন করেন এমডি। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনও নেওয়া হয়নি। অথচ ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ সাকুর্লার অনুযায়ী, সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা নিজস্ব ক্ষমতায় এমডি কর্তৃক অনুমোদনের সুযোগ রয়েছে। এর বেশি হলেই পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে।

বর্তমানে এবি ব্যাংকে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে যে অনিয়ম হয়েছে, তা স্পষ্ট। কারণ, এমডির ঋণ অনুমোদনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া আছে ফান্ডেড সাড়ে ১২ কোটি এবং নন-ফান্ডেড সাড়ে ১২ কোটি। দুটি যোগ করলেও হয় ২৫ কোটি। কিন্তু গ্রাহককে সুবিধা দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩১ কোটি টাকার। ফলে নিয়মানুযায়ী তা ব্যাংকের পর্ষদে উপস্থাপন হওয়ার কথা। কিন্তু এমডি নিজস্ব ক্ষমতায় এটি অনুমোদন দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। এতে যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞার পরও এই প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এলসি সুবিধা দেওয়ার কারণে জানতে চাইলে ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত এমডি সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, এটা সাইট এলসি। এ ধরনের এলসির ক্ষেত্রে ব্যংকে ডকুমেন্টস আসলে গ্রাহক ক্যাশ টাকা দিয়ে তা ছাড় করান। আমাদের উদ্দেশ্য, আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা। ধরা যাক কোনো কারণে গ্রাহক টাকা দিয়ে এটি ছাড় করতে ব্যর্থ হলেন, তাহলে এই ছোলার কী হতো। আমি বলব, রোজার সময় এই ছোলা বিক্রি করা কঠিন হতো না। কারণ, দেশে ছোলা কেনার মতো অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন। মূলত এই চিন্তাভাবনা থেকে এই এলসি খুলতে আগ্রহ দেখিয়েছি। তাহলে ব্যাংক সরাসরি এই ব্যবসা করলেই পারে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ছোলা বিক্রির কাজতো ব্যাংকের না। তবে অনেক সময় আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এমন পন্থাও অবলম্বন করতে হয়। প্রথমবার এই প্রস্তাবের অনাপত্তি পেতে একজন ডেপুটি গভর্নর বরারর আবেদনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রাহক বলেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন আনতে পারবেন। এ কারণে নিয়ম রক্ষায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল।

এক দেশের কথা বলে আরেক দেশ থেকে আমদানি: নথিপত্রে অস্টেলিয়া থেকে ছোলা আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিলেন গ্রাহক। কিন্তু এই এলসির বিল অব এন্ট্রি পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক দেখেছে, দুবাইয়ের ড্যামেনস জেনারেল ট্রেডিং এলএলসি থেকে ওই গম আমদানি হয়েছে। আর এই প্রতিষ্ঠানটির মালিকও বাংলাদেশি সেলিম চৌধুরী।

শতভাগ মার্জিনে এলসি খোলা হলেও পেমেন্ট হয়নি: ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত জামানতবিহীন নতুন ঋণ অনুমোদন না করার জন্য ব্যাংকটিতে নির্দেশনা প্রদান করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগ। এ কারণে ঝুঁকি বিবেচনায় বিনা জামানতে আলোচ্য গ্রাহকের অনুকূলে এলসি খোলার প্রস্তাবটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নাকচ করে দেয়। তখন ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত এমডি কৌশলে শতভাগ মার্জিন দেখিয়ে নিজস্ব অনুমোদিত সীমার বাইরে এলসি খোলার প্রস্তাব অনুমোদন করেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এলসি খোলার দুইদিনের মাথায় (১৮ ফেব্রুয়ারি) আলোচ্য এলসির বিল অব এন্ট্রি সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ, পণ্য দেশে চলে এলেও পেমেন্ট হয়নি। পেমেন্টে বিলম্ব হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, নগদ মার্জিনের টাকা গ্রাহক কর্তৃক জমা করা হয়েছে কি না। মাত্র দুই দিনের মধ্যে পণ্য দেশে পৌঁছানো ঘিরেও রহস্য তৈরি হয়েছে।

প্রকৃত সুবিধাভোগি সেলিম চৌধুরী:  গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল পৌনে ৪টার দিকে টাওয়ার হেমলেটে সরেজমিনে যান এই প্রতিবেদক। ভবনটিতে নিচ তলায় দেওয়ালে টানানো ডিজিটাল সাইনবোর্ডে দেখা যায়, এখানে ইনফিনিট হরিজন নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম নেই। তবে ব্যাংকটির আরেক গ্রাহক গ্লোবাল করপোরেট বিডির নাম আছে, যার অবস্থান ভবনটির ৭ তলায় (লিফটের ছয়)। যদিও সাত তলায় গিয়ে দেখা যায়, আলোচ্য অফিসের প্রবেশমুখে ইনফিনিট হরিজন করপোরেশন নাম দেওয়ালে টানানো রয়েছে। এরপর অফিসের ভেতরে প্রবেশ করে রিশিপশনে চোখ পড়তেই দেখা গেল সেখানে ইনফিনিট হরিজন করপোরেশন ও গ্লোবাল করপোরেট বিডির নাম পাশাপাশি লেখা আছে। একই ফ্লোরে মূল অফিসে ঢোকার জন্য দক্ষিণ ও উত্তর দিকে কাঁচের দরজা রয়েছে। দক্ষিণ দিকে গ্লোবাল করপোরেশন ও ইনফিনিটি হরিজন করপোরেশন এবং উত্তর দিকে বিঅ্যান্ডসি করপোরেশনের অফিস। অর্থাৎ, গ্লোবাল করপোরেশন, বিঅ্যান্ডসি করপোরেশন এবং ইনফিনিট হরিজনের অফিসের ঠিকানা ও অবস্থান একই ফ্লোরে। তবে এসব ইস্যুতে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন ইনফিনিটি হরিজনের মালিক আবু নোমান। একই ফ্লোরের মধ্যে গ্লোবাল করপোরেশন ও বিঅ্যান্ডসি করপোরেশনের অফিস থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে এসব প্রতিষ্ঠানকে তিনি চিনেন না বলে দাবি করেন। পরে এই অফিস সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এর মূল মালিক সেলিম চৌধুরী।

সূত্র জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণীসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সেলিম চৌধুরী ও তার পরিবারের ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে; যা ইতোমধ্যেই খেলাপির খাতায় উঠেছে। এ বিষয়ে টাওয়ার হেমলেট সোসাইটির ম্যানেজার আবু ছাইদ বলেন, ওই ভবনের ৭ তলার ফ্লোরটির মালিক সেলিম চৌধুরী। এখানে গ্লোবাল করপোরেট বিডি নামে যে অফিস সেটা তারই। মাঝেমধ্যে তিনি ও তার ছেলে এখানে অফিস করেন। তার দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram