দেশের কঠিন সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংসদ না থাকায় আমরা গতকাল জাতির সামনে বাজেট উপস্থাপন করেছি। অর্থ বিলে রাষ্ট্রপতি সই করেছেন। সেটা দ্রুতই হবে। সেখানে যদি কিছু থাকে সেটাও আমরা চেষ্টা করব নিতে।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতা নেইনি, দায়িত্ব নিয়েছি। দায়িত্বটা একটা কঠিন সময়ে নিয়েছি। দেশের এক ক্রান্তিলগ্নে। অনেকেই বলেছেন দেশ আইসিইউতে ছিল, খাদের কিনারে চলে আসছিল, বিশেষ করে আর্থিক ব্যবস্থাপনায়। সে সময় যদি আমরা দায়িত্ব না নিতাম তাহলে কী হতো? যাই হোক, আমরা চেষ্টা করে সবাই মিলে দেশটাকে একটা স্থিতিশীল অবস্থান নিয়ে আসতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘যে সংস্কারগুলো আমরা হাতে নিয়েছি সেটা চলমান। আমরা যতটুকু পারি, করব আমরা যে পদচিহ্ন (ফুটপ্রিন্ট) রেখে যাব। আশা করছি পরে যারা আসবে তারা সেটা বাস্তবায়ন করবে।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাজেটের প্রেক্ষিত আপনারা জানেন যে আমাদের সম্পদ সীমিত, চাহিদা অনেক বেশি। বাইরে থেকে সম্পদ আনা, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, পুঁজিবাদের অবস্থা, ব্যাংকের অবস্থা, আইনশৃঙ্খলা অবস্থা সব মিলিয়ে একটা বিশৃঙ্খলা। এর ভেতরেই আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। কথার ফুলঝুড়ি ছড়িয়ে কিন্তু আমরা বাজেট করিনি। আমাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ ছিল যেমন- মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকখাত, জ্বালানিখাত, রাজস্ব আদায় এসব কিছুর মধ্যেই বাজেট করতে হয়েছে। তারপরও আমাদের প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার বাড়েনি।’
তিনি বলেন, ‘এতদিন তো আপনারা প্রবৃদ্ধির ন্যারেটিভ শুনেছেন। গ্রোথ হয়েছে অনেক বেশি, কিন্তু সেটার সুবিধা কে পেয়েছে? সেখান থেকে বেরিয়ে এসে আমরা মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হয়, ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে, ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে চালিয়ে যেতে পারে সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাজেট সাজিয়েছি। জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা রাজস্ব আদায় বাড়ানো, এনবিআর সংস্কার করছি। আমরা বাইরের ঋণের ওপর যে নির্ভর করব সেটা নয়। আমি প্রাথমিকভাবে মনে করি জনবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব বাজেট হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।