যুগান্তর পত্রিকা আজ প্রথম পাতায় শিরোনাম করেছে ‘৩৩ মন্ত্রীসহ আ.লীগের দুই শতাধিক এমপি লাপাত্তা’। খবরে বলা হয়, গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক ১৮ মন্ত্রী, ১৩ প্রতিমন্ত্রী, একজন উপমন্ত্রী, স্পিকার, চিপ হুইপ-হুইপসহ আওয়ামী লীগের দুই শতাধিক সংসদ-সদস্য এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই লাপাত্তা তারাও। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেউ কেউ ইতোমধ্যে সুযোগ বুঝে দেশের বাইরে চলে গেলেও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বেশিরভাগ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ-সদস্য দেশের ভেতরেই লুকিয়ে আছেন।
অভিযোগ রয়েছে, এরা আত্মগোপনে থেকেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকারের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এমনকি বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ করতেও তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছিলেন গোপালগঞ্জ-৩ আসনের। তিনি আছেন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ও রংপুর-৬ আসনের ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ঢাকাতেই আত্মগোপনে আছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী এবং নোয়াখালী-৫ আসনের ওবায়দুল কাদের আত্মগোপনে। সব সময় নানা বিষয়ে মিডিয়ার সামনে অসংলগ্ন কথা বলা এই রাজনীতিক ৫ আগস্টের পর থেকেই লাপাত্তা।
এছাড়াও আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য এবং আলোচিত সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন-সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ঢাকা-১২ আসনের আসাদুজ্জামান খান কামাল (ভারত), আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা-১৩ আসনের জাহাঙ্গীর কবির নানক (ভারত), সাবেক অর্থমন্ত্রী ও দিনাজপুর-৪ আসনের আবুল হাসান মাহমুদ আলী (যুক্তরাষ্ট্র), সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ও দিনাজপুর-৫ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং পিরোজপুর-১ আসনের অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম (লন্ডন), আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, চট্টগ্রাম-৭ আসনের ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ (বেলজিয়াম), সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৯ আসনের মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (যুক্তরাষ্ট্র), সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-১৩ আসনের সাইফুজ্জামান চৌধুরী (লন্ডন), সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং নেত্রকোনা-২ আসনের আশরাফ আলী খান খসরু (ভারত), সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী ও গাজীপুর-১ আসনের আ ক ম মোজাম্মেল হক (ভারত), আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ও ফরিদপুর-১ আসনের আব্দুর রহমান (ভারত), আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেকমন্ত্রী, শেখ হাসিনার আত্মীয় ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের শেখ ফজলুল করিম সেলিম (ঢাকা), সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও কুমিল্লা-১১ আসনের মুজিবুল হক মুজিব (আগরতলা), সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী এবং চাঁদপুর-২ আসনের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (ভারত), সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাবেক একেএমএ আবুল মোমেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী ও কুমিল্লা-১০ আসনের আ হ ম মুস্তাফা কামাল, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী এবং মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ-সদস্য জাহিদ মালেক। প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন-সাবেক নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী ও দিনাজপুর-২ আসনের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (লন্ডন), সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ আসনের শাহরিয়ার আলম, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও মাগুরা-২ আসনের বীরেন শিকদার (কলকাতা), সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং লালমনিরহাট-১ আসনের মো. মোতাহার হোসেন (ঢাকা), সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা-১৭ আসনের মোহাম্মদ এ আরাফাত (যুক্তরাষ্ট্র), সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর-২ আসনের জাহিদ আহসান রাসেল (ভারত), সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর-৩ আসনের রুমানা আলী (ঢাকা), সাবেক নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর-৪ আসনের সিমিন হোসেন (ঢাকা), সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর-৩ আসনের রুমানা আলী, সাবেক রেলপথ প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের জিল্লুল হাকিম, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের কাজী কেরামত আলী, সাবেক পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী এবং জামালপুর-৩ আসনের মির্জা আজম (ভারত)। এছাড়াও সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের একেএম এনামুল হক শামীমও (ভারত) ৫ আগস্টের পর থেকেই আত্মগোপনে।
আজ প্রায় সব পত্রিকার প্রধান শিরোনাম নতুন আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিয়ে।
সমকাল পত্রিকা তাদের প্রধান শিরোনাম করেছে ‘অভ্যুত্থান থেকে জন্ম নিল এনসিপি’। খবরে বলা হয়, অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আত্মপ্রকাশ করেছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণঅভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেওয়া দলটির নেতারা ঘোষণা করেছেন, তারা অন্য কোনো দেশ নয়, তারা হবেন বাংলাদেশপন্থি। তাদের লক্ষ্য ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ তথা দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আর তা পূরণে নতুন সংবিধান প্রণয়নে সংসদের আগে গণপরিষদ নির্বাচন চান জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নায়করা। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের উদ্যোগে গঠিত এনসিপির ঘোষণাপত্রে এসব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বড় জমায়েতের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছে ইতিহাসের মেরূকরণ পাল্টে দেওয়া দলটি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মত্যাগকে সার্থক ঘোষণা দিয়ে তারা বলেছেন, ভারতপন্থি, পাকিস্তানপন্থি রাজনীতির ঠাঁই বাংলাদেশে হবে না। সাতচল্লিশ, বায়ান্ন, একাত্তর এবং চব্বিশকে ধারণ করা বাংলাদেশপন্থি রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য চেয়ে সংসদের আগে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে এনসিপি। দলটি সরকারের আনুকূল্যে তথা ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে গঠিত হচ্ছে বলে সমালোচকরা বললেও, তা নাকচ করছেন অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টার পদ ছেড়ে আসা নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বাধীন দলটির নেতারা। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের উপদেষ্টাদের আমন্ত্রণ করা হলেও তাদের কেউ আসেননি। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এনসিপি নেতারা বলেন, গণপরিষদে নতুন সংবিধান রচিত হবে। যার মাধ্যমে গড়ে উঠবে কাঙ্ক্ষিত প্রজাতন্ত্র। যেখানে সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত হবে। পরিবারতন্ত্র নয়, মেধা ও যোগ্যতায় রাজনৈতিক নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। বাংলাদেশের ক্ষমতায় কে যাবে, তা ভারত নির্ধারণ করবে না। ভারতীয় ‘আধিপত্যবাদের’ বিরোধিতা করা এনসিপির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান স্লোগান ছিল– ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’। মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ উচ্চারিত হয়েছে এর পরেই। আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভাবনীয় পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানের স্লোগান– ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’; ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’ স্লোগানও দেওয়া হয় আত্মপ্রকাশ মঞ্চ থেকে।
দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘রাজনীতিতে তারুণ্য শক্তির উদ্বোধন’। এতে বলা হয়, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের সমন্বয়ে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ করেছে। নতুন দলের আহ্বায়ক করা হয়েছে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে আখতার হোসেনকে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নতুন রাজনৈতিক দল ও আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের নাম ঘোষণা করেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত শহীদ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন রাব্বীর বোন মীম আক্তার। কমিটি ঘোষণার পর বক্তব্যে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলন, বাংলাদেশে ভারতপন্থি বা পাকিস্তানপন্থি রাজনীতির কোনো ঠাঁই হবে না। তার বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে বাংলাদেশে একটি সেকেন্ড রিপাবলিক বা দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার বিষয়ে। ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াই সূচনা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদের সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সব সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে হবে। এরপর নাহিদ ইসলাম দলের পক্ষ থেকে একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এদিকে বেলা ৩টায় সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের কথা থাকলেও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মূল সমাবেশ শুরু হয় বিকেল ৪টার পর। তবে সকাল থেকেই তরুণ থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ওই এলাকা। নতুন দল গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার ও সুস্থ ধারার রাজনীতি করবে। পাশে দাঁড়াবে গণমানুষের, করবে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার, এমন প্রত্যাশা আগতদের। সমাবেশে যোগ দিতে দেশের প্রান্তিক এলাকা থেকে এসেছেন প্রবীণরাও। বিগত দিনের রাজনীতির খুঁটিনাটি ভুল এবং তা থেকে উত্তরণে তরুণদের ওপর আস্থা তাদের। সমাবেশে সংগঠনটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এতে দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন শামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব হয়েছেন ডা. তাসনিম জারা, নাহিদা সরওয়ার রিভা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হয়েছেন হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হয়েছেন সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক হয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হয়েছেন আবদুল হান্নান মাসউদ। যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সারওয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন, তুজরুবা জাবিন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিম, এহতেশাম হক ও হাসান আলী।
নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে ২০ দিনে গ্রেফতার ১১ হাজার ৯০০’। খবরে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে সারা দেশে শুরু হওয়া অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে গত ২০ দিনে ১১ হাজার ৯৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই অভিযানে ৮৪৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়, এর মধ্যে ৬১৮ জন অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে এবং ২২৮ জন ডিএমপির সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেফতার হন। গ্রেফতারদের কাছ থেকে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ছোরা, কার্তুজ, চাকু, গাঁজা, ইয়াবা ও হেরোইন। এছাড়াও, ঢাকা শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ চেকপোস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে এবং বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় অতিরিক্ত টহল টিমও দায়িত্ব পালন করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপির ৫০টি থানা এলাকায় ৫৫০টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করেছে এবং ৬৫টি পুলিশি চেকপোস্ট পরিচালিত হয়েছে। এছাড়াও, সিটিটিসি, এটিইউ ও র্যাবের টহল টিমগুলোও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করেছে। অভিযানে উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে ছিল ৩৭ কেজি গাঁজা, ২৩৮ পিস ইয়াবা এবং ২০.২ গ্রাম হেরোইন।
প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর, ‘বোতলের সয়াবিনের সংকট, চড়া দামে বিক্রি খোলা তেল’। খবরে বলা হয়, রমজান মাসে পণ্য কেনাকাটার প্রস্তুতির মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে গিয়েও দেখা যায় যে, পাঁচ লিটারের বোতল তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক সপ্তাহ ধরে এই সংকট চলছে। এই অবস্থায় খোলা সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তা বোতলজাত তেলের থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এক মাসে খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৫ থেকে ১৭ টাকা বেড়েছে। সরকারি সংস্থা টিসিবি জানায়, সয়াবিন তেলের আমদানি বেড়েছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও দাম স্থিতিশীল থাকলেও ক্রেতারা তেলের চড়া দাম সহ্য করতে বাধ্য হচ্ছেন। ভোজ্যতেলের চাহিদা বছরে ২২ লাখ টন হলেও, অধিকাংশ তেল আমদানি করতে হয়। যদিও সরকার বলছে যে, সংকট কাটানোর জন্য তেলের সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে, তবুও বাজারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তেলের সরবরাহ যদি স্বাভাবিক করা যায়, তবে বাজারও স্বাভাবিক থাকবে।
আমার দেশ পত্রিকার প্রথম পাতায় শিরোনাম ‘চিকিৎসার খরচে পিষ্ট মানুষ’। খবরে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে পেট ও কোমর ব্যথাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন রাজধানীর কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা অটোরিকশা চালক ওয়াদুদ মিয়া (৪৫)। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসেন চিকিৎসা নিতে। এ সময় সিআরপি, এসজিপিটি ও সেরাম ক্রিয়েটিনিনসহ পাঁচটি পরীক্ষা দেন চিকিৎসক। যার মাত্র দুটি সরকারি এই হাসপাতালে করতে পারলেও তিনগুলো করতে হয়েছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। বিনামূল্যে ডাক্তার দেখাতে পারলেও রোগ নির্ণয়ে এবং ওষুধ কিনতে ওয়াদুদের ব্যয় করতে হয়েছে দুই হাজার ২৩০ টাকা। এর মধ্যে শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষাতেই গেছে এক হাজার ৭০০ টাকা। আমার দেশকে ওয়াদুদ বলেন, ‘দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখাতে পেরেছি। মাত্র দুই মিনিটের মতো দেখেছেন তিনি। কথা শেষ না হতেই প্রেসক্রিপশন হাতে ধরিয়ে দিলেন। বিনামূল্যে পাওয়া এতটুকুই। পাঁচটি টেস্ট দিয়েছেন। নমুনা দিতে গেলে বলে হাসপাতালে দুটি করা যাবে, বাকি তিনটি বাইরে করাতে হবে। শুধু কি তা-ই; ওষুধও ঠিকঠাক পাওয়া যায় না। চার ধরনের ওষুধ দিলেও পেয়েছি মাত্র একটি। বাকিগুলো বাজার থেকে কিনতে হয়েছে।’ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে এমন বাড়তি ব্যয়ের বোঝায় চিড়ে চ্যাপটা হওয়ার কাহিনি শুধু ওয়াদুদের নয়। প্রতিদিন সেবা নেওয়া লাখ লাখ রোগীর। স্বয়ং সরকারি গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গবেষণা বলছে, সেবা নেওয়া ৭৪ শতাংশ রোগীকে অতিরিক্ত খরচের বোঝা টানতে হয়। যার বড় অংশই যায় রোগ নির্ণয় ও ওষুধের পেছনে।
আজকের পত্রিকার শিরোনাম করেছে ‘বাংলাদেশি যুবককে নির্যাতনের পর মৃত ভেবে ফেলে গেল বিএসএফ’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশি এক যুবককে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নির্যাতন করে মৃত ভেবে সীমান্তে ফেলে যায়। ওই যুবকটির নাম বিল্লাল সানা, তিনি খুলনার পাইকগাছার খড়িয়া টেমশাখালী গ্রামের আব্দুল মাজেদ সানার ছেলে। বিল্লাল পাঁচ বছর ধরে ভারতের কলকাতায় শ্রমিকের কাজ করতেন। গত বুধবার তিনি বাংলাদেশে আসার উদ্দেশ্যে ভারতে থেকে বের হন। বিএসএফ সদস্যরা তাকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে এবং ধরা পড়লে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন বিল্লাল, পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে মৃত ভেবে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে চলে যায়। তবে বিজিবি সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে মহেশপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিল্লাল এখন কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছেন। মহেশপুর বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, টহলের সময় বিল্লালকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
কালের কণ্ঠ পত্রিকা প্রথম পাতায় শিরোনাম করেছে ‘বইমেলায় বইয়ের সংখ্যা ও বিক্রি কমেছে’। খবরে বলা হয়, ২০২৫ সালের অমর একুশে বইমেলায় বই প্রকাশের সংখ্যা এবং বিক্রি দুইই কমেছে। এবারের মেলায় প্রায় সাড়ে চারশো বই কম প্রকাশিত হয়েছে, নতুন বইয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ২৯৯টি, যা গত বছরের তুলনায় ৪৫২টি কম। বইমেলার বিক্রিও কমেছে, তবে বাংলা একাডেমির বিক্রি গত বছর থেকে কিছুটা বেশি, প্রায় ৬১ লাখ টাকা। তবে, মেলা পরিচালনা কমিটি এখন পর্যন্ত মেলার মোট বিক্রির পরিমাণ জানায়নি। প্রকাশকরা জানিয়েছে, তারা হতাশ, কারণ বিক্রি কমেছে এবং অনেক প্রকাশক তাদের খরচের পরিমাণ তুলনায় বিক্রি সন্তোষজনক হয়নি। হাওলাদার প্রকাশনীর মাকসুদ হাওলাদার বলেন, গত বছর যেখানে ১৭ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল, এবার ২৭শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র পাঁচ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। মেলা এবার তিন দিন কম ছিল, ২৮ দিনের পরিবর্তে ২৫ দিন হয়েছে। ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে এবং এক হাজার ৮৪ ইউনিট বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে, শিশু চত্বরে কিছুটা বৃদ্ধি হলেও অনেক লিটল ম্যাগাজিন তাদের স্টল খোলেনি।
বণিক বার্তা পত্রিকার প্রধান শিরোনাম, ‘মরণোত্তর সম্মাননা পেলেন প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার বিশাল অবদানের জন্য প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। তিনি ভ্যাট ব্যবস্থা প্রবর্তন, তৈরি পোশাক খাতে ব্যাক টু ব্যাক এলসি এবং বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা চালু করার মাধ্যমে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক নীতি ও ব্যক্তি খাতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ঢাকায় 'গুণীজন সংবর্ধনা' অনুষ্ঠানে তার পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে এম সাইফুর রহমানের জীবনের ওপর আলোচনা করা হয় এবং তার শাসনকাল ও নীতির প্রশংসা করা হয়। বিশেষ করে, তাকে একজন দেশপ্রেমিক, পেশাদার এবং দূরদর্শী নেতা হিসেবে স্মরণ করা হয়। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় হয়েছিল, বিশেষত তিনি যেসব মৌলিক সংস্কার এনেছিলেন তা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে উন্নতির দিকে পরিচালিত করেছে। অনেক বক্তা তার সিদ্ধান্ত এবং কর্মের প্রশংসা করেছেন এবং তার অবদানকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসে একটি অমূল্য দিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।