সৈয়দ ছায়েদ আহমেদ, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, "ইউনুস সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে বলছি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি চা-শ্রমিকদের ভূমির অধিকার ও দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি নিশ্চিত না করা হয়, তবে এই নির্বাচন কোনভাবেই অর্থবহ হবে না। একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে বৈষম্য, লাঞ্ছনা ও শোষণের মধ্যে রেখে সংস্কার সম্ভব নয়।"
রোববার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে “চা-শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র”-এর প্রথম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি’র বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
সম্মেলনের মূল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক সবুজ তাঁতি এবং এস এম শুভ সঞ্চালনায় আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথি সিপিবি’র সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ছাড়াও বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতা জলি তালুকদার, মাহবুব আলমসহ বিভিন্ন চা-বাগানের পঞ্চায়েত নেতা ও শ্রমিক প্রতিনিধি।
এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কমরেড সেলিম। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তিনি এবং সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন আহ্বায়ক সবুজ তাঁতি। সম্মেলনের সূচনা হয় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে, যেখানে চা-জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সংগীত, আবৃত্তি, নাটক ও ইতিহাস তুলে ধরা হয়। “মুল্লুক চলো” আন্দোলন নিয়ে পরিবেশিত নাটকটি দর্শকদের আবেগপ্লত করে তোলে শহরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। ব্যানার, ফেস্টুন ও শ্লোগানে মুখরিত এই র্যালিতে হাজার হাজার চা-শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও যুবক অংশ নেন। এতে শ্রীমঙ্গল ছাড়াও সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ জেলার শতাধিক চা-বাগান থেকে মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সোহরাব হাসান বলেন, “চা-শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায় না হলে প্রয়োজনে দেশের সকল চা-বাগান বন্ধ করে দিয়ে এই দাবি পূরণ করতে হবে।”
বক্তারা বলেন, “১৮৫ বছরের বঞ্চনা আর চলবে না। ভূমির অধিকার ও ৬০০ টাকা দৈনিক মজুরি সহ ১০ দফা এখন সময়ের দাবি।” তাঁরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলকে ইশতেহারে চা-শ্রমিকদের দাবি অন্তভুক্ত করার আহ্বান জানান।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, “চা-শ্রমিকের সন্তান যেন আর কুঁড়েঘরে বড় না হয়, যেন শিক্ষার আলো ছুঁয়ে যায় প্রতিটি পরিবার এই স্বপ্ন নিয়েই আজকের সম্মেলন। আজকের সম্মেলন চা-শ্রমিকদের সংগ্রামের এক নতুন সূচনা।”