গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। মারধরের একপর্যায়ে ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাবার চেয়েছিলেন তোফাজ্জল। হত্যার আগে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে ভাত খেতে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তখন সামাজিক মাধ্যমে তৈরি হয় ব্যাপক সমালোচনা।
এর একদিন পরই ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম মোল্লা ক্যাম্পাসে উত্তেজিত লোকজনের পিটুনিতে হত্যার শিকার হন। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর পিটিয়ে হত্যা করা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদকে। সবশেষ গত ১৪ জুন রাতে গাজীপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে চুরির অভিযোগে শাহরিয়ার রহমান নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।
২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত ১০ মাসে দেশে মব সৃষ্টির মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন মোট ১৭৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮০ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৬ জন, রংপুর বিভাগে ৭ জন, সিলেট বিভাগে ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯ জন, বরিশাল বিভাগে ১৭ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন।- আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১০ মাসে সারাদেশে এভাবেই ‘মব’ সৃষ্টি করে অন্তত ১৭৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বারবার ‘মব ভায়োলেন্সের’ বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা বলা হলেও কার্যত এতে কোনো ফল হচ্ছে না। কথিত উত্তেজিত জনতার নামে একের পর এক ঘটানো হচ্ছে অপ্রীতিকর ঘটনা। যার সর্বশেষ শিকার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
গত ২২ জুন রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসায় ‘মব’ তৈরি করে হেনস্তা করা হয় সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে। তার ওপর ডিম নিক্ষেপ করে গলায় পরানো হয় জুতার মালা। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জুতা পেটা করতেও কুণ্ঠিত হননি মব সৃষ্টিকারীরা।
মব আসলে কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না। এটি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আমরা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সবাইকে অবগত করেছি যে, মব সৃষ্টি করে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করা না হয়। আসলে মব তো কখনো জাস্টিস হতে পারে না, মব ভায়োলেন্স।- এআইজি ইনামুল হক সাগর
গত ১০ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের হায়দারাবাদ এলাকার আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুহাম্মদ রইস উদ্দিনের পরিবার। পরিবারটির অভিযোগ, পূর্বশত্রুতার জেরে ‘বলাৎকারের’ ঘটনা সাজিয়ে ‘মব’ তৈরি করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে।
রইস উদ্দিনের স্ত্রী সাজেদা আক্তার বলেন, রইস উদ্দিন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের হায়দারাবাদ এলাকার আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব ছিলেন। গত ২৭ এপ্রিল সকাল ৮টায় পূর্বশত্রুতার জেরে ‘বলাৎকারের’ অভিযোগ তুলে পরিকল্পিত ঘটনা সাজিয়ে একটি ‘মব’ তৈরি করা হয়। পরে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। পেটে, বুকে, পিঠে, তলপেটে, চোখের নিচে ও মাথায় আঘাতের পর আঘাত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠালে ওই রাতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৩টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজধানীর দারুস সালামের দ্বীপনগর এলাকায় গত ৩১ মে মাইকিং করে তানভীর ও ফাহিম নামের দুই তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা। স্থানীয়সহ পুলিশের দাবি, নিহতরা মাদক কারবারি। এ কারণে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের পিটিয়ে হত্যা করে। পরদিন একই এলাকার রাস্তা থেকে রাসেল নামের এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধু মৌখিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে। দু-একটি ঘটনায় চাপে পড়ে দু-একজনকে আটক করেছে, পরে আবার মুচলেকা নিয়ে ছেড়েও দিচ্ছে। মব হচ্ছে ছোঁয়াচে অসুখের মতো। এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।- অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায় থেকে ‘মব’-এর বিরুদ্ধে বার বার কড়া বার্তা দেওয়া হলেও এর লাগাম টানা যাচ্ছে না। থামছেন না মব সৃষ্টিকারীরা। সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধু কড়া বার্তা দিয়েই এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তাদের মতে, মবকে জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে জোরালো ব্যবস্থা নিতে না পারলে ‘মব’ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না।
আসকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশে মবের শিকার হয়ে মারা যান ৩২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৬ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭ জন, সিলেট বিভাগে ১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন।
সরকার পতনের পর শুধু আগস্টে এক মাসেই দেশে মবের শিকার হয়ে প্রাণ হারান ২১ জন।
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি এ সংস্থাটির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত ১০ মাসে দেশে মব সৃষ্টির মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন মোট ১৭৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮০ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৬ জন, রংপুর বিভাগে ৭ জন, সিলেট বিভাগে ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯ জন, বরিশাল বিভাগে ১৭ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন।
সোমবার (২৩ জুন) গাজীপুরে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিস করা হয়েছে তা কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনায় বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অথচ এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মো. হানিফসহ তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. সানাউল্লাহ বুধবার (২৫ জুন) এ আদেশ দেন।
গত ২৬ মে ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক (কর্নেল স্টাফ) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে নিরলস কাজ করছে সেনাবাহিনী। ভবিষ্যতে জানমালের ক্ষতিসাধন, মব ভায়োলেন্স ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে পারে এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
এর আগে গত ৯ মার্চ সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছিলেন, এখন থেকে কেউ মব জাস্টিস কিংবা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে ওই স্থান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হবে। যে অপরাধী তাকে আমরা ওখানেই গ্রেফতার করবো। আমরা একদিনও অপেক্ষা করবো না। ওখান থেকেই তুলে নিয়ে আসবো।
গত ১৯ মে রাতে ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে একজন প্রকাশককে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে তার বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেন একদল যুবক। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। পরে ওই ব্যক্তিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে ওই প্রকাশককে গ্রেফতার করতে বলেন। কিন্তু ওই প্রকাশকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তারে অপারগতা প্রকাশ করে পুলিশ। পরে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান তারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনজনকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। পরদিন ২০ মে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সবার ভূয়সী প্রশংসা পান ওসি। পেশাদারত্ব ও ধৈর্যের সঙ্গে ‘মব’ নিয়ন্ত্রণ করায় পরে ওই ওসিকে পুরস্কৃত করে ডিএমপি।
‘মব ভায়োলেন্স’ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘মব আসলে কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না। এটি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আমরা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সবাইকে অবগত করেছি যে, মব সৃষ্টি করে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করা না হয়। আসলে মব তো কখনো জাস্টিস হতে পারে না, মব ভায়োলেন্স।’
তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব যে ব্যবস্থা আছে পেট্রোলিং টিম সবসময় মাঠে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় সতর্ক থাকে। আমরা পুলিশিং করি যেন এমন কোনো ঘটনা না ঘটে। কোথাও এ ধরনের ঘটনার খবর পেলে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করি। কোনো ব্যক্তি যখন মব করে একজনকে একেবারে নাজেহাল করে ফেলছে তখন কিন্তু তিনি নিজেই অপরাধী হয়ে যাচ্ছেন।’
সবাইকে ‘মব’ মোকাবিলায় সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘সবাই যেন এ বিষয়ে সতর্ক থাকে। যে অপরাধ করে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। মবের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
রাজধানীতে মব ঠেকাতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কড়া বার্তা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মব অ্যালাউ করছি না। অনেক মামলাও নিয়েছি। মব ভায়োলেন্সের ঘটনায় আমরা ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা নিয়েছি। দু-একটি মবের ঘটনায় পুলিশ অফিসারদের কর্তব্যে অবহেলা পাওয়ায় তাদের সাসপেন্ড ও শাস্তি দিয়েছি। গত তিন-চার মাস আগের তুলনায় এখন মব অনেকটাই কমেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক অবশ্য মনে করছেন, মব ভায়োলেন্স বন্ধে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেগুলো যথাযথ নয়।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধু মৌখিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে। দু-একটি ঘটনায় চাপে পড়ে দু-একজনকে আটক করেছে, পরে আবার মুচলেকা নিয়ে ছেড়েও দিচ্ছে। মব হচ্ছে ছোঁয়াচে অসুখের মতো। এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’
এ অপরাধ বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘আমাদের মতো দেশে মব খুব দ্রত ছড়ায়। কারণ, এখানে আইনের শাসনের প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধার ব্যাপারগুলো বিতর্কিত। মানুষ নিজেই যখন নিজ হাতে আইন তুলে নিয়ে কোনো একটা অভিযোগ বা অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার করার মতো অবাধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, তখন আমাদের দেশের মানুষ সে পথেই হাঁটে।’
‘বাংলাদেশে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার না হওয়ার সংস্কৃতি আছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অভিযোগগুলো যখন থাকে তখন আসলে মানুষ কোনো আচরণে ক্ষুব্ধ হলে নিজেই প্রতিশোধ নিতে চায়। এখন এগুলোই হচ্ছে। মব আইনের শাসনের পরিপন্থি একটি বিষয়। এটিকে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ছড়াবেই।’
ড. তৌহিদুল হক মনে করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিপূর্ণ সক্ষমতা বা সক্ষমতার প্রশ্নে অতীতের অবস্থা পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত মবকে জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে। মব সৃষ্টির ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতার এবং আইনের মুখোমুখি করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যতক্ষণ পর্যন্ত জোরালো ব্যবস্থা নিতে না পারবে মব বন্ধ হবে না। এছাড়া অপরাধীদের দ্রুত সময়ে জামিন অযোগ্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায়ও আনতে হবে।