এস এম নজরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে মধুমতি নদীর ভাঙ্গনে ঘর-বাড়ী ফসলি জমি হারিয়ে সর্বশান্ত হয়েছে অনেক পরিবার। স্থানান্তরিতও হয়েছে অনেক পরিবার। তবে এবার ১২শ’ মিটার তীব্র ভাঙ্গন এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় আশার আলো দেখছেন স্থানীয় অনেক পরিবার ও আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা। তবে আরো ৩শ’ মিটার এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজ করার দাবী স্থানীয়দের। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে, বরাদ্দ পেলে বাকী অংশেও কাজ করা হবে। এতে ওই এলাকায় আর কোন ভাঙ্গনের আশংকা থাকবেনা।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদাহ এলাকায় মধুমতি নদীর ভাঙ্গনের এই চিত্র বহু পুরনো। কয়েক বছর আগে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় সেখানকার বাড়িঘর, ফসলী জমি, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, স্কুল, খেলার মাঠ ও পাকা রাস্তা। সর্বশান্ত হয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করতে হয় অনেক পরিবারকে। ফলে ওই এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ১২শ’ মিটার এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নদীতে তীব্র স্রোত থাকলেও জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলে ভাঙ্গন ঠেকিয়ে নদীর তীর ব্লক দিয়ে বাঁধাই করে প্রতিরক্ষা কাজ শুরু করা হয়। এ প্রতিরক্ষা কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। ফলে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে এলাকার বাড়িঘর, ফসলী জমি, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা, স্কুল, খেলার মাঠ ও পাকা রাস্তা এবং একটি আশ্রয়ন প্রকল্পসহ বহু স্থাপনা। ফলে এখন নিশ্চিন্তে রাত কাটাতে পারছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
মানিকদাহ গ্রামের ইনসান মোল্রা ও চরমানিকদাহ গ্রামের রহমত খান জানান, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে মানিকদাহে মধুমতি নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় দুটি প্যাকেজে ৬শ’ মিটার করে ১২শ’ মিটার প্রতিরক্ষা কাজ শুরু হয়, ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে পুরোপুরি নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে আরো ৩’শ মিটার এলাকায় প্রতিরক্ষা কাজের দাবী তাদের। তবে নদী ভাঙ্গন এলাকায় ১২’শ মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করায় মধুমতির হাত থেকে রেহাই পাওয়ায় আশায় আলো দেখছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাজী হায়াৎ মাসুদ জানান, প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করায় এ এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেছেন, মধুমতি নদীর মানিকদাহ এলাকার ভাঙ্গন কবলিত এরাকায় প্রতিরক্ষা কাজ করা না গেলে নদী ভাঙ্গনে কিছুদিন পরে ওই গ্রামের আরো হাজারো পরিবার এবং মানিকদাহ আশ্রায়ন কেন্দ্রের মানুষ চরম বিপদের সম্মুখীন হতো। আমাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, আগামী ডিসেম্বরে ঠিকাদার আমাদেরকে কাজ হস্তান্তর করবে। এখন স্থানীয়দের কাছে অনেকটা দর্শনীয় স্থান ও বিনোদনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এলাকাটি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, ওই এলাকায় নদীর কুল ঘেঁষে কিছু বেঞ্চ ও শোভাবর্ধনকারী গাছ রোপন করবো। যাতে মানুষ সেখানে গিয়ে দু’দন্ড বিশ্রাম করে স্বস্তি পায়। মানিকদাহ এলাকায় আরো ৩০০ মিটার প্রতিরক্ষা কাজ কারার জরুরী প্রয়োজন। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা ও অনুমোদন সাপেক্ষে তা বাস্তবায়ন করবো বলে জানান এই কর্মকর্তা।