ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সামনে টানা ছয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা। মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল থেকে তার সমর্থকেরা সেখানেই অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগের দিন, সোমবার, বিক্ষোভকারীরা নগর ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। আন্দোলনের কারণে নগর ভবনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীও কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেননি, ফলে সেবা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, আদালতের রায়ে মেয়র হিসেবে ইশরাকের নাম ঘোষণার পরও সরকার তাকে শপথ নেয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। তারা সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে অবিলম্বে শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি করেন।
এ বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, 'বিষয়টি এখনও উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত শপথের ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়।'
এদিকে গতকাল সোমবার আন্দোলন চলাকালে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে এই সংকটের জন্যে দায়ী করে তার কুশপুতুল পোড়ায় এবং তার প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ করেন আন্দোলনকারীরা।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হয়। এর ফলে মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে একটি পোস্টে আন্দোলনকারীদের প্রতি এ ধরনের আচরণ না করতে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন ইশরাকে হোসেন।
ইশরাক লেখেন- ‘আমি আন্দোলনরত ঢাকা দক্ষিণ সিটির জনগণ ও ভোটারদের বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসরদের বাদে অন্য কোন রাজনৈতিক দলের নেতার বিরুদ্ধে যত ক্ষোভ থাকুক না কেন, আমরা তাদের অসম্মান হয় এরকম কিছু করা থেকে শতভাগ বিরত থাকি। আমরা সমালোচনা করি, রাজনৈতিক বক্তব্যর মধ্য দিয়ে তাদেরকে সতর্ক করি, তাদের ভুল ধরিয়ে দেই কিন্তু অবশ্যই ভাষাগত শিষ্টাচার মেনে।’
ইশরাক হোসেন আরও লেখেন- ‘অনেক তো দেখে আসছি আর পেছনের দিকে দেশটাকে নিতে চাই না। অবশ্যই আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করব, দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিবো, নির্বাচনী স্পষ্ট রোডম্যাপ আদায়ের মাধ্যমে আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ নিব। এমনকি বর্তমানে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগে কঠোর গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও করবো। কিন্তু ভাষা ও ব্যবহার জাতে শত্রুও সমালোচনা করতে না পারে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ মাসে আদালতের এক রায়ে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বৈধ মেয়র ঘোষণা করা হয়। তবে বর্তমানে দায়িত্বে থাকা করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হবে জুনের প্রথম সপ্তাহে। ফলে নতুন মেয়রের শপথ গ্রহণ নিয়ে আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়েছে।