ঢাকা
১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:৩৩
logo
প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৫, ২০২৫

অনিশ্চয়তার মুখে ইবি শিক্ষকের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম

রিয়াদ, ইবি প্রতিনিধি: গবেষণার কাজে বিদেশে থাকা অবস্থায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলামের শিক্ষা-ছুটি বাতিলের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ছুটি প্রাপ্তির অধিকার থাকলেও তাকে বঞ্ছিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই অধ্যাপক। ২২ জানুয়ারি রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলাম এসব অভিযোগ তুলে করেন।

এদিকে ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য তিনি আবেদন করলেও তা মঞ্জুর করেনি প্রশাসন, বরং এক মাসের মধ্যে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রশাসন তাকে অবগত না করেই বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ফলে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মুঝে পড়েছেন এই অধ্যাপক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. জহুরুল ইসলাম বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ডেকোটায় ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইন এন্ড টেকনোলজি বিষয়ে এমএস ২ বছরের ডিগ্রিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এজন্য ২০২৩ সালের ১৭ মে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি বিধির ২০ (ক) এর ১ ও ৪ ও (ঘ) ধারা অনুযায়ী ১ বছরের জন্য সবেতনে শিক্ষা ছুটির আবেদন করি। বিধি অনুযায়ী শিক্ষা ছুটি সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি এজেন্ডাভূক্তও হয়। তৎকালীন প্রশাসন আমার পিএইচডি ডিগ্রি থাকায় এম.এস ডিগ্রির জন্য ছুটি অনুমোদন করেনি। পরে আমি ১ বছরের জন্য স্যাবাটিক্যাল লিভের জন্য আবেদন করি এবং কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই ‘স্যাবাটিক্যাল লিভ’ মঞ্জুর করেন।

এদিকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রজেক্টে রিসার্চ অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হওয়ায় গত ৯ আগস্ট স্যাবাটিক্যাল লিভের পরিবর্তে ছুটি বিধির ২০(৭) ধারা অনুযায়ী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা প্রজেক্টে কাজের জন্য সবেতনে শিক্ষা ছুটির আবেদন করি। পরে স্ট্যান্ডিং কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট হতে ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত ১ বছরের সবেতনে শিক্ষা ছুটি মঞ্জুর করেন। অনুমোদিত ছুটিতে আমি যুক্তরাষ্ট্রের গমন করি এবং উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করি।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর,  এক বছর করে শিক্ষা ছুটি প্রদান করা হয়। তাই, ২০২৪ সালে ২৭ জুলাই নিয়ম অনুযায়ী চলমান শিক্ষা ছুটির মেয়াদ ১ বছর বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করি। পরে স্ট্যাডিং কমিটির সভায় বিষয়টি এজেন্ডাভূক্ত হয়। কিন্তু এই ছুটি মঞ্জুর একটি রুটিন ওয়ার্ক হওয়া সত্ত্বে ২ মাসের বেশী সময় পরে আমাকে পত্র দিয়ে ছুটি মঞ্জুর হয়নি মর্মে জানানো হয় এবং ১ মাসের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়। একইসঙ্গে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাকে অবগত না করে আমার বেতনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে গত ৩০ অক্টোবর বিষয়টি পুনঃ:বিবেচনার জন্য জন্য আবেদন করি। পরে উপাচার্য স্ট্যান্ডিং কমিটির এজেন্ডাভূক্ত করেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, গত ৯ ডিসেম্বর উপ-উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হওয়া সভায় আমার আবেদন আলোচনারই সুযোগ দেওয়া হয় নি। আমি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি মিটিং এর চেয়ার থেকেই এরূপ ভাষ্য দেওয়া হয়েছে যে, এটা একটা অবৈধ ছুটি, কীভাবে এই ছুটি দেওয়া হলো তা তদন্ত করতে হবে এবং যারা ছুটি দিয়েছেন তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা হবে। আমি আশঙ্কা করছি আমার বিষয়ে যেকোনো ধরনের নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে প্রশাসন কুণ্ঠাবোধ করবেন না।

জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলাম বলেন, আমি কোন দলের পক্ষে না, সবসময় ন্যায়ের পথে থেকেছি ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। হঠাৎ আমার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে আমার পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটা অনেক বড় নিষ্ঠুরতা। বিষয়টি আমাকে মর্মাহত করেছে। তিনি আরও জানান, বিধি অনুযায়ী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৫ বছরের জন্য সবেতনে শিক্ষা ছুটির সুবিধা পেয়ে থাকেন। সেই সাথে গবেষণার জন্য সবেতনে ১ বছরের স্যাবাটিক্যাল লিভ, ২ বছরের পোস্টডক, ২/৩ বছরের অর্জিত ছুটি, ৪ বছর বিনা বেতনে লিয়েন ছুটি এবং কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে একট্রা অর্ডিনারি লিভ পেয়ে থাকে। অথচ আমার মাত্র ১ বছর ছুটি ভোগ যেনো বিশাল অন্যায় হয়ে গেছে। শিক্ষকগণের এই সুবিধা প্রদান করা হয় শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত বিদেশে উচ্চশিক্ষাকে উৎসাহিত করা। আমার উচ্চশিক্ষার পথটি যেন রুদ্ধ না হয় এবং গবেষণাকর্ম যেন ভালোভাবে সমাপ্ত করতে পারি সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও নায্যতা সাপেক্ষে আমার বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করার অনুরোধ করছি। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাকার্যক্রম শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে এবং উচ্চশিক্ষায় টেকনোলজি ইন্ট্রিগ্রেশনে ভূমিকা রাখতে পারবো বলে বিশ্বাস করছি।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, মিটিংয়ে সবার উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এখানে আমার একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। উনি যদি মনে করেন, উনার প্রতি অবিচার করা হয়েছে তবে তিনি সেটা ভাইস চ্যান্সেলর কাছে অভিযোগ করুক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী অবশ্যই সমাধান করা হবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram