রাফাহ সীমান্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শনিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় এ ঘোষণা দেয়।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি (এএ) ও ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
আনাদোলু জানায়, মার্কিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত” বন্ধ থাকবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “এর খোলার সিদ্ধান্ত হবে হামাস কিভাবে মৃত বন্দিদের প্রত্যাবর্তন এবং চুক্তিভিত্তিক কাঠামো বাস্তবায়ন করে তার ওপর নির্ভর করে।”
সংবাদমাধ্যম দুটি জানায়, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৭ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ ফিলিস্তিনি। এরমধ্যেই রাফা সীমান্তও বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলো ইসরায়েল। এর ফলে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রাফাহ ক্রসিংটি চুক্তির প্রথম ধাপ হিসেবে গত বুধবার পুনরায় খোলার কথা ছিল। গেল ১০ অক্টোবর চুক্তি কার্যকরের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৭ বার লঙ্ঘন করেছে তেল আবিব।
গোলাবর্ষণ, টার্গেট হামলা ও বেসামরিকদের ওপরগুলি চালানোর অভিযোগ এনেছে স্থানীয় প্রশাসন। মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এসব হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ট্যাংক, ড্রোন ও সেনা যান।
শেজাইয়া, আল-তুফাহ ও যায়তুনেসেনা মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে নেতানিয়াহু বাহিনী। খান ইউনিস থেকেও সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়নি। এমনকি বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুনে এখনও ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে।
এই অবস্থার মধ্যে গাজার একমাত্র আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার রাফা সীমান্ত খুলে দেয়ার কথা থাকলেও তা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার দাবি, হামাস এখনো সব মৃত জিম্মির মরদেহ ফেরত দেয়নি, তাই সীমান্ত খোলা সম্ভব নয়।
ফিলিস্তিনি দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, গেল সোমবার থেকে রাফা খুলে দেয়ার কথা। কিন্তু নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তে তা স্থগিত হয়ে যায়। স্বাধীনতাকামী সংগঠনের দাবি করেছে যে রাফাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন।
রাফা সীমান্ত পুনরায় খোলা ও মানবিক সহায়তা প্রবেশের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল। ওই চুক্তির লক্ষ্য ছিল যুদ্ধ বন্ধ করে গাজার মানবিক সংকট কিছুটা লাঘব করা।
হামাস শনিবার জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরাইল রাফাহ সীমান্ত বন্ধ রাখলে বন্দিদের মরদেহ হস্তান্তর বিলম্বিত হবে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় শনিবার রাতে গাজায় আরও দুই ইসরাইলি জিম্মির মরদেহ রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস।
সূত্র: আনাদোলু, রয়টার্স