‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কি ফিক্সিং হচ্ছে?’ — প্রশ্নটা শেষ কিছু দিন ধরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে বেশ করে। চলমান বিপিএলে বেশ কিছু উদ্ভট ঘটনা সে বিষয়টাকে আরও বেশি উসকে দিয়েছে।
সে আগুনে ঘি ঢেলেছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক জ্যারড কিম্বার। সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেল ‘গুড এরিয়াস উইদ জ্যারড কিম্বার’-এ তিনি একাধিক ম্যাচ বিশ্লেষণ করে, তার সঙ্গে বাজির যোগটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।
তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে ধীরগতিতে শুরু করা দলগুলো পাওয়ারপ্লের শেষ দিকে এসে রান বাড়িয়ে নিচ্ছে বোলারদের ‘সহায়তায়’। ঠিক সে ম্যাচে, যেখানে সে দলটার পাওয়ারপ্লেতে বড় রানের অনুকূলে বাজির পরিমাণ থাকত বেশি।
বিষয়টা আরও উদ্ভট রূপ পেয়েছে কিম্বারের পরের তথ্যে, বেশ কিছু ম্যাচে মাঝের ওভারে দলগুলোর রান বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে, যখন উইকেটে সেট ব্যাটার ছিল না, বৃত্তের বাইরেও ফিল্ডার ছিলেন বেশি, স্বাভাবিকভাবে তখন রান তোলার চেয়ে উইকেট ধরে রাখার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কাকতালীয় বলুন আর যাই বলুন, এই ম্যাচগুলোতেও মাঝের ওভারে দলগুলোর বেশি রানের অনুকূলে বাজির দর ছিল আকাশছোঁয়া।
সেসব তো আছেই, বল ক্রিজেই রাখতে পারছেন না বোলাররা– এমন দৃশ্য বেশ কিছু ম্যাচে দেখা গেছে, সঙ্গে বিশাল বিশাল নো বল তো আছেই! এমন সব ঘটনা আর যাই হোক স্বাভাবিক কিছু নয়। তাই সন্দেহের উদ্রেক ঘটাতে বাধ্য।
সে সন্দেহের প্রকাশ করেছেন রংপুর রাইডার্সের টিম ডিরেক্টর শাহনিয়ান তানিম। তিনি সম্প্রতি একটি পত্রিকাকে জানিয়েছেন, একাধিক দলের খেলা দেখে সন্দেহ হয়েছে মনে। তিনি বলেন, ‘এবার কখনো কখনো কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড়দের খেলা দেখে মনে হয়েছে, সন্দেহজনক কিছু একটা হচ্ছে। কিছু অস্বাভাবিক কাজ তাঁরা করছেন। তবে তথ্য–প্রমাণ ছাড়া নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে কিছু বলা উচিত হবে না।’
তবে নিজ দলের পারফর্ম্যান্স নিয়ে তিনি জানান, তার দলে এমন সন্দেহজনক কিছুই দেখেননি তিনি। তার কথা, ‘আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি, আমাদের ফ্র্যাঞ্চাইজিতে এ রকম কোনো সমস্যা নেই। আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড় দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। তারা তাদের সর্বস্ব দিয়ে দলকে ভালো ফলাফল এনে দিতে চায়।’
তার মতো একই সুরে কথা বলেছেন বাকি দলের মালিকপক্ষও। এমনকি ফিক্সিংয়ের গুঞ্জন নিয়ে কথাগুলোও প্রায় একই সুরে বলেছেন সবাই, শুনেছেন এ বিষয়ে, কিন্তু তথ্য প্রমাণ ছাড়া কিছু বলতে চাননি কেউই।
