প্রথম রাতের কারফিউ আর গণআটকের পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার কারফিউ তুলে নেয়ার প্রথম রাতে লস অ্যাঞ্জেলেসে ‘অস্বস্তিকর’ শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে। এর কারণ হিসেবে আমেরিকার বিভিন্ন শহরে আবারও বিক্ষোভের প্রস্তুতির কথা বলা হয়।
সংবাদমাধ্যমটির তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার লস অ্যাঞ্জেলেসে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪শ’ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে ৩৩০ জন অবৈধ অভিবাসী এবং ১৫৭ জনকে হামলা, পুলিশ অফিসারকে হত্যাচেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ফেডারেল প্রসিকিউটররা দুটি পৃথক ঘটনায়, পুলিশ অফিসারদের ওপর মোলোটভ ককটেল নিক্ষেপের দায়ে, এখন পর্যন্ত দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অপরদিকে, অস্থিরতা দমনে মোট ৪ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা এবং ৭শ’ মেরিন সেনা মোতায়েন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেইসাথে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা যেন সাধারণ নাগরিকদের আটক করাতে পারে, তার অনুমতিও প্রদান করা হয়।
এর আগে, গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন অভিযানকে এই বিক্ষোভের জন্য দায়ী করে বলেন, ‘ভয়’ এবং ‘আতঙ্ক’ সৃষ্টি করে বাসিন্দাদের ‘উত্তেজিত’ করা হয়েছে বলেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এক সপ্তাহ আগে সবকিছু শান্তিপূর্ণ ছিল। শুক্রবার অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি কঠিন হতে শুরু করে। এ সময় স্থানীয় সরকারের এখতিয়ার ক্ষমতায় ভাগ বসাতে ফেডারেল সরকার কতদূর যেতে পারে, তা নির্ধারণের জন্য একে একটি জাতীয় পরীক্ষার অংশ হিসেবেও উল্লেখ করেন। সেইসাথে প্রশাসনের কাছে অভিযান বন্ধ করার আহ্বানও জানান তিনি।
এর আগে, ক্যালিফোর্নিয়ায় অভিবাসনবিরোধী ট্রাম্প প্রশাসনের ধরপাকড়ের প্রতিবাদে শহরের ডাউনটাউনে চলমান বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে লস অ্যাঞ্জেলেসে আংশিক কারফিউ জারি করা হয়। এরপর থেকেই ‘গণগ্রেফতার’ শুরু করে পুলিশ।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস জানান, কারফিউ রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এবং এটি প্রায় এক বর্গমাইলজুড়ে ডাউনটাউন এলাকা কভার করবে। লস অ্যাঞ্জেলেসে ভাঙচুর ও লুটপাট ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।