ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বড় আকারের প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন উচ্চ হারে আরোপিত শুল্কের প্রভাব থেকে তাদের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখা যায়।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তোর সরকার মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৪ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন রুপিয়াহ (প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার) মূল্যের একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
এই প্রণোদনার অংশ হিসেবে জুন ও জুলাই মাসে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ (যাদের বেশিরভাগই নিম্নআয়ের) প্রতি মাসে ৩ লাখ রুপিয়াহ নগদ সহায়তা ও ১০ কেজি চাল পাবেন। এছাড়া, গণপরিবহন ভাড়াও উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা হবে, যার মধ্যে ট্রেন ভাড়ায় ৩০ শতাংশ ছাড় থাকবে।
জনগণের ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টিকিয়ে রাখাই এর মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী শ্রী মূল্যানি ইন্দ্রাওয়াতি।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক ভিত্তিতে মাত্র ৪.৮৭ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০২১ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের পর সর্বনিম্ন। মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়াই এর অন্যতম কারণ।
দেশটিতে সরকারি অনুষ্ঠান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবসায়িক ভ্রমণ এবং বাজেট খরচ ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা হয়েছে।
মার্কিন শুল্ক নীতি কার্যকর হলে দেশটির অর্থনৈতিক মন্দাকে ত্বরান্বিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে অর্থমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, সরকার ঘোষিত রাজস্ব ব্যয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ এর আশেপাশে স্থিতিশীল থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রপ্তানি পণ্যে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে, যার ওপর ঘোষিত ৯০ দিনের বিরতি এক মাসের মধ্যেই শেষ হবে। এই সময়ের মধ্যে অঞ্চলটির দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক কমাতে আলোচনা চালিয়ে গেলেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
আঞ্চলিক হতাশা বাড়ছে। এপ্রিলে সিঙ্গাপুর তাদের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১-৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য থেকে ২ শতাংশ করেছে। মে মাসে থাইল্যান্ড তাদের পূর্বাভাস ২.৩ থেকে ৩.৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১.৩ থেকে ২.৩ শতাংশ করেছে।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতোংতার্ন শিনাওয়াত্রা মে মাসে এক বিবৃতিতে বলেন, এটি একটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট।
ওই মাসে থাই মন্ত্রিসভা ১৫৭ বিলিয়ন বাথের (প্রায় ৪.৮১ বিলিয়ন ডলার) প্রণোদনা প্যাকেজ অনুমোদন করে, যার অর্থ ব্যয় হবে পর্যটন কেন্দ্র উন্নয়ন, রেল ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণে।
এই প্রণোদনার তহবিল যোগাড় করতে সরকার ১০ হাজার বাথ করে নাগরিকদের বিতরণের একটি কর্মসূচি আংশিকভাবে স্থগিত করেছে।
মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম মে মাসে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার জন্য ১.৫ বিলিয়ন রিঙ্গিত (৩৫৪ মিলিয়ন ডলার) সমমূল্যের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন, যার মধ্যে রয়েছে স্বল্পসুদে অর্থায়ন ও সরকারি ঋণ গ্যারান্টি।
সূত্র: নিক্কেই এশিয়া
