ঢাকা
২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৮:৩৮
logo
প্রকাশিত : মে ৭, ২০২৫

শুধু সীমান্তে নয়, ‘যুদ্ধ’ চলবে দেশের ভিতরেও, ‘মক্ ড্রিল’ শিখিয়ে দেবে, পরের কাজ দেশবাসীর, মত প্রাক্তন কর্নেলের

যুদ্ধ কোনও ব্রিগেড সমাবেশ নয়। সবাই মিলে বাসে-লরিতে চেপে ব্রিগেডের মাঠে পৌঁছলাম, যা হওয়ার সেখানেই হল। তার পর আবার সকলেই যে যার জেলায়, শহরে, গ্রামে, পাড়ায় ফিরে গেলাম। দিনভর দৌড়ঝাঁপে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি বলে জলদি মুখহাত ধুয়ে, খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। যুদ্ধ এ রকম একমাত্রিক কোনও ঘটনা নয়। এক দিন বা দু’দিনের ঘটনাও নয়। যুদ্ধ যদি শুরু হয়, তা হলে তার প্রভাব বহুমাত্রিক এবং দীর্ঘ হবে।

সশস্ত্র বাহিনী সীমান্তে যুদ্ধ লড়বে। সুযোগ পেলে শত্রুর ভূখণ্ডে ঢুকে গিয়েও লড়বে। কিন্তু দেশের ভিতরেও তখন আর এক যুদ্ধ চলবে। সে যুদ্ধ সাধারণ নাগরিককেই রোজ লড়তে হবে এবং সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে লড়তে হবে। বুধবার দেশ জুড়ে মক্ ড্রিল চালিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সেই অভ‍্যন্তরীণ যুদ্ধটা সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে লড়ার পথই দেখিয়ে দিতে চাইছে।

এ রকম শেষ বার হয়েছিল ১৯৭১ সালে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ তথা পাকিস্তান ভেঙে গিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম সে বছর। ভারতের পূর্ব এবং পশ্চিম, দুই সীমান্তেই যুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু শত্রুর হামলা শুধু সীমান্তে সীমাবদ্ধ থাকেনি। পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভারতীয় আকাশসীমার ভিতরে ঢুকেও বোমাবর্ষণ করে যেত। আমাদের বিমানবাহিনীও পাল্টা হানা দিত। কিন্তু আকাশপথে শত্রুপক্ষের এই সব হানা যখন ঘটত, তখনই সাধারণ নাগরিককে বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব‍্যবস্থার আড়ালে চলে যেতে হত। সেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলি কী রকম এবং কোন ব‍্যবস্থা কেন জরুরি, মক্ ড্রিল আমাদের সে কথাই বোঝাবে।

ঘরে-বাইরে সব আলো নিবিয়ে ব্ল‍্যাকআউট করা বা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে ঢুকে পড়ার অভিজ্ঞতা কলকাতা ১৯৭১ সালের আগেও অর্জন করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ ছিল। তখন কলকাতা ছিল ব্রিটিশ তথা মিত্রশক্তির অন‍্যতম বড় এশীয় ঘাঁটি। বজবজ থেকে চট্টগ্রাম হয়ে রেঙ্গুন— এই ছিল বাংলা-বর্মার মাঝে সেনা ও রসদ চলাচলের রুট। তাই বজবজ ইংরেজ বাহিনীর জন‍্য ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ সংযোগকেন্দ্র। জাপানি যুদ্ধবিমান সেই বজবজে এসেও বোমাবর্ষণ করে গিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। তাই বর্তমান প্রজন্ম না-দেখলেও কলকাতা এমন পরিস্থিতি আগেও একাধিক বার দেখেছে।

বুধবার গোটা দেশে যে মক্ ড্রিল বা মহড়া আয়োজিত হচ্ছে, তা মূলত কাজে লাগবে বিমানহানার সময়েই। অর্থাৎ পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান যদি ভারতের লোকালয়ে বোমা ফেলতে আসে, তা হলে সাধারণ মানুষ কী করবেন, মহড়ায় সে সবই শেখানো হবে। এই ধরনের হামলার ক্ষেত্রে ঘরের বা মহল্লার সমস্ত আলো তো আগেই নেবাতে হয়, যাতে পুরো জনপদ অন্ধকার হয়ে থাকে। শত্রুর যুদ্ধবিমান যাতে বুঝতেই না-পারে যে নীচে কোনও লোকালয় রয়েছে। কিন্তু এটুকুই যথেষ্ট নয়। পরিবারের সকলকে নিয়ে ঘরের মধ্যেও নিরাপদতম স্থানটি খুঁজে বার করতে হয়। সেটা খাটের তলা হতে পারে, টেবিলের তলা হতে পারে। যাতে বাড়ি বা তার একাংশ ভেঙে পড়লেও মাথায় চোট না লাগে। যাতে জখম হলেও প্রাণটা অন্তত বেঁচে যায়।

এর আগের যে সব যুদ্ধ আমরা দেখেছি, তখন ক্ষেপণাস্ত্র হানার ভয় ছিল না। এখন তো দু’দেশের হাতেই ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। যদি পাকিস্তানি ক্ষেপণাস্ত্র কোথাও আছড়ে পড়ে, তা হলে কী ব‍্যবস্থা নিতে হবে, মক্ ড্রিলে সে সবও শেখানো হবে। কোথাও বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্র পড়লে সেখানে আগুন ধরে যেতে পারে। তাই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আগুন নেবানোর ব‍্যবস্থা হাতের কাছে রাখতে হবে। হাতের কাছে রাখতে হবে প্রাথমিক চিকিৎসার ব‍্যবস্থা। অথবা যৌথ ভাবে এলাকায় এলাকায় তৈরি রাখতে হবে প্রাথমিক চিকিৎসা শিবির। যদি কেউ জখম হন, দ্রুত তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তার পরে হাসপাতালে পাঠাতে হবে।

সূত্র- আনন্দবাজার

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram