ঢাকা
১৩ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১১:৫৫
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

ট্রুডোর সামনে কঠিন সময়

রাজনৈতিক সংকট ক্রমশ গভীর হচ্ছে। একসময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র, মন্ত্রিপরিষদের সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের আকস্মিক পদত্যাগে মারাত্বক এক অনিশ্চয়তায় পড়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। গত সোমবার তার কাছে এক খোলা চিছি লিখে পদত্যাগ করেন সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ফ্রিল্যান্ড। ওই চিঠিতে ট্রুডোর সঙ্গে খরচের খাত এবং কানাডার সামনে উত্তম পথের বিষয়ে মতবিরোধকে বড় করে তুলে ধরেন তিনি। ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় আসছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি কানাডার পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এ নিয়ে মতবিরোধের কথা তুলে ধরেন ফ্রিল্যান্ড।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের নীতি কানাডার অর্থনীতিকে বিধ্বস্ত করে দিতে পারে। এর ফলে পার্লামেন্ট হিলে এমনকি ট্রুডোর নিজের দল লিবারেল পার্টির কিছু সদস্যের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, ট্রুডো কি এই কঠিন সময়ে নেতৃত্ব দিতে পারবেন কিনা। উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে লিবারেল পার্টি অব কানাডার নেতা জাস্টিন ট্রুডো। তার মধ্যে ২০১৫ সাল থেকে কমপক্ষে ৯ বছর কানাডার প্রধানমন্ত্রী তিনি। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলটির নেতা বা নেত্রী যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন। যদি তা অবিলম্বে কার্যকর হয়, তাহলে দলীয় সদস্যদের সমাবেশে নতুন স্থায়ী একজন নেতা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত একজন অন্তর্বর্তী নেতা দায়িত্বে থাকেন। যদি ট্রুডো পদত্যাগ করেন তাহলে নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত ট্রুডো তার পদে থাকতে পারবেন। এক্ষেত্রে নতুন নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রুডো তার প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হারাবেন এবং তা হস্তান্তর করতে হবে উত্তরসুরির কাছে। তবে পরিস্থিতি যা, তাতে মনে হয় না সহসা স্বেচ্ছায় তিনি পদত্যাগ করবেন। ফ্রিল্যান্ডের বিদায়ের পর নিজের ককাসের এক জরুরি মিটিংয়ে পার্লামেন্টে লিবারেল পার্টির সহকর্মীরা তার পদত্যাগের আহ্বান জানান। তবে জবাবে ট্রুডো বলেছেন তিনি সময় নেবেন। মঙ্গলবার লিবারেল পার্টির প্রতি বিশ্বাসীদের উদ্দেশে ছুটির দিনের বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। স্বীকার করেছেন, রাজনীতিতে বড় চ্যালেঞ্জ এসেছে। তিনি বলেন, কঠিন এই সময়ে এখনই থেমে যাওয়ার সময় না। এখন সময় উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণের। এবারের গ্রীষ্ম থেকে বেশ চাপে রয়েছেন ট্রুডো। তার অনুমোদনের রেটিং কমে গেছে। একসময় লিবারেলদের আসন বলে পরিচিত এমন কিছু আসনে ধারাবাহিক কিছু নির্বাচনে তার দলের ভরাডুবি হয়েছে। এ থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, তার দল বড় রকম সমস্যায়। এর আগে অক্টোবরে তার ককাসে ছোটখাট এক বিদ্রোহের মুখে পড়েন ট্রুডো। ওই সময় ২৪ জন এমপি তার পদত্যাগ দাবি করে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।

ওদিকে জনমত জরিপগুলো এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, কানাডায় যদি আজই ফেডারেল নির্বাচন হয়, তাহলে বিরোধী কনজার্ভেটিভ পার্টি বড় মাপের বিজয় অর্জন করবে। এসব সংকট ও হতাশার কথা যখন সামনে চলে এসেছে, তখন ট্রুডো আবারও আগামী নির্বাচনে লিবারেল দলের নেতা হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। লিবারের পার্টির ১৫৩ জন এমপির মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৩ জন প্রকাশ্যে ট্রুডোর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। দলীয় গঠনতন্ত্রের অধীনে যদি নির্বাচনে পরাহিত হয় তাহলে দলীয় নেতার পদ ভোটে দেয়া যায়। অন্যদিকে জনমত জরিপে দুই অংকে এগিয়ে আছে কনজার্ভেটিভ পার্টি। কয়েক মাস ধরে তারা হাউস অব কমন্সে ট্রুডোর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট দাবি করে প্রস্তাব এনেছে। কিন্তু তাতে এখন পর্যন্ত সফল হয়নি তারা। যদি হাউস অব কমন্সে অনাস্থা ভোটে সরকার হেরে যায় তাহলে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হয় অথবা পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হয়। এর ফলে নতুন ফেডারেল নির্বাচন সামনে চলে আসে। অনাস্থা ভোটে টিকে থাকতে সরকারের প্রয়োজন ৩৩৮ এমপির সমর্থন। তাহলে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন হয়। কিন্তু লিবারেল পার্টির তা থেকে ১৭টি আসন কম আছে। তা সত্ত্বেও বিরোধী দল কনজার্ভেটি পার্টির অনাস্থা প্রস্তাব ব্যর্থ হয়। এর কারণ হতে পারে এনডিপি বা ব্লক কুইবেকুইস’রা হয়তো লিবারেলদের সমর্থন দিয়ে ওই ১৭ আসন পূর্ণ করেছে। মঙ্গলবার ছুটি উপলক্ষ্যে পার্লামেন্ট মুলতবি হয়ে গেছে। ফলে ট্রুডোকে জানুয়ারির শেষ নাগাদ আর কোনো অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। তবে সোমবার এনডিপি নেতা জগজিৎ সিং প্রথমবারের মতো ট্রুডোর পদত্যাগ দাবি করেছেন। ফলে লিবারেল দলের ক্ষমতায় টিকে থাকার ক্ষেত্রে ক্রমশ ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram