গাজীপুর প্রতিনিধি: শিক্ষা ও গবেষণার প্রগতিশীল পরিসরে নারীর অংশগ্রহণ ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে, কিন্তু তাদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বিষয়ে সচেতনতা এখনও প্রয়াজনীয় মাত্রায় পৌঁছায়নি। এই প্রেক্ষাপটে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) সোমবার প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো এক সেমিনার। নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি একাডেমিক পরিসরে অধিক মনোযোগ এবং নীতিগত অগ্রাধিকার তৈরির লক্ষ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর আয়োজনে সকাল সাড়ে ১০টায় আইকিউএসি এর সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
পরিচালক (আইকিউএসি) প্রফেসর ড. নাসরীন আক্তার আইভী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ। অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআরবি হসপিটালের ডা. জান্নাতুর নাঈম। এতে অংশগ্রহণ করেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নারী শিক্ষক।
সেমিনারে ডা. জান্নাতুর নাঈম নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য, হরমোনজনিত জটিলতা, মানসিক চাপ এবং কর্মস্থলে স্বাস্থ্য-সচেতনতা বিষয়ে প্রাঞ্জল ও তথ্যবহুল আলোচনা করেন। পরে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণকারীদের নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগের সাবলীল উত্তর দিয়ে তিনি সেমিনারটিকে করে তোলেন আরও প্রাণবন্ত ও অন্তর্দৃষ্টিমূলক।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য একাডেমিক অগ্রগতিতে নারীস্বাস্থ্য সচেতনতার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, “নারীর স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর দায়িত্ব নয়, এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত না করে সত্যিকারের অগ্রগতি সম্ভব নয়।” তবে নারীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য প্রতিনিয়ত শারীরিক ব্যায়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে বলেও উপাচার্য উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্য করেন। গাকৃবিতে শীঘ্রই ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনসহ নারী শিক্ষকবৃন্দের সামগ্রিক স্বাচ্ছন্দ্যমূলক পরিবেশ নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে বলে ভাইস-চ্যান্সেলর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শরীফ রায়হান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি উপাচার্যের সাথে স্মৃতিময় ফটোসেশনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে। উল্লেখ্য, এ সেমিনারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীস্বাস্থ্য নিয়ে একটি ইতিবাচক আলোচনার সূচনা হলো যা কেবল তাৎক্ষণিক সচেতনতা নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী নীতিগত পরিবর্তনের পথও উন্মুক্ত হলো বলে উপস্থিতগণ মনে করেন।