ঢাকা
৯ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৪:৪৩
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ৯, ২০২৫

অস্তিত্ব সংকটে গোলাপ গ্রাম, নেপথ্যে আবাসন প্রকল্প

ভালো নেই সাভারের গোলাপ চাষিরা। আবাসন প্রকল্পের কালো থাবায় ক্রমেই কমছে গোলাপ বাগান। সেচ সংকটসহ নানা কারণে কমছে উৎপাদনও। যদিও উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, গোলাপের ফলন বাড়াতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। আবাসন ঠেকাতে সরকারের হস্তক্ষেপ চান কর্মকর্তারা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিরুলিয়া গোলাপ গ্রামে উৎপাদনের বাগানে খরা পড়েছে। ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে গোলাপ বাগান। হারিয়ে যাওয়া বাগানের মাটিও কেটে নিচ্ছে কেউ কেউ। যার নেপথ্যে আবাসন প্রকল্প। বিভিন্ন স্থানে জমি কব্জায় নিয়ে সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে রেখেছে তারা। কোথাও কোথাও আবার মাটি কেটে মরুভূমি করে রেখেছে।

যেসব বাগানে গোলাপ চাষ হয়েছে, সেগুলোতেও আশানুরূপ ফলন পাননি কৃষকরা। কোনো বাগানে পানির অভাবে নেতিয়ে পড়েছে ফুল। গোড়ার মাটি শুকিয়ে ফেটে গেছে।

মজনু, রহিম ও ইয়াসিন নামের একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, কৃষকদের বাধ্য করা হচ্ছে জমি বিক্রি করতে৷ আবাসন কোম্পানির লোকজন স্থানীয় একটি চক্রকে লালন করে। তারাই কৃষককে নানা নির্যাতন ও কৌশলে ফেলে কোম্পানির হাতে জমি তুলে দেয়। কোম্পানি কৃষকের বাগানে যাওয়ার সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এমনকি কৃষক যেন চাষাবাদ করতে না পারে সেজন্য সেচের গভীর নলকূপও তুলে ফেলার অভিযোগ রয়েছে।

একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তাদের চোখে মুখে ছিল আতঙ্কের ছাপ। তাই নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ ছিল তাদের। কারণ আবাসন মালিকের বিরুদ্ধে কিছু বললে পড়তে হয় নানা ষড়যন্ত্রের জালে।

জানা গেছে, বাগানে ফুটে থাকা গোলাপ যেন এ অঞ্চলের চাষিদের কাছে আশির্বাদ। যা থেকে প্রতি মৌসুমে আয় আসে প্রায় শত কোটি টাকা। তবে এ আয়ের গ্রাফ যেন নিম্নমুখী। নানা সংকট আর প্রতিবন্ধকতা ভালো নেই চাষিরা। দিনের পর দিন কমছে গোলাপ বাগান। উৎপাদনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে দর্শনার্থীও। আর যারাও আসছেন, ফুলশূন্য বাগান আর গোলাপ বাগানের পরিবেশ নিয়ে হতাশ তারা। আগে সাভারের বিরুলিয়াতেই শুধু ২০০ হেক্টর জমিতে গোলাপ চাষ হলেও এখন কমে তা দাঁড়িয়েছে ১১০ হেক্টরে।

ঢাকা থেকে গোলাপ গ্রামে ঘুরতে আসা কলেজছাত্র সাবান মাহমুদ বলেন, বিস্তৃত এই পতিত ভূমিতে একসময় বাতাসে দোল খেত নানান রঙের গোলাপ। এখন আবাসন প্রকল্পের থাবায় উর্বর জমিগুলো পতিত হয়ে আছে।

মেহেরুন-রুমা দম্পতি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, ঢাকার আশপাশে এমন একটি জায়গা ছিল, যেখানে একটু হলেও বিশুদ্ধ শ্বাস নেওয়া যেত৷ এখন তা অতীত। মাটি কাটতে কাটতে বাগানগুলো শেষ করে দিচ্ছে ভূমি খেকোরা। এদের আইনের আওতায় আনতে হবে। না হলে বাঁচানো যাবে না গোলাপ গ্রাম।

গোলাপ গ্রাম নিয়ে কথা হয় সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুনের সঙ্গে। তিনিও গোলাপ গ্রাম নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ফলন বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা কাজ করছি। তবে আবাসন বন্ধের বিষয়ে সরকারকেই হস্তক্ষেপ করতে হবে। সত্যিই দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে গোলাপ গ্রাম।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram