

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: “জমি আছে ঘর নেই” প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে হতদরিদ্র দুই নারীর নিকট থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা অনল, এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী দুই নারী। নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের হতদরিদ্র শাহানা আক্তার (৬০) এবং নুরেছা আক্তার (৫০) একই ইউনিয়নের বালালী গ্রামের আহেদ আলী মিয়ার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা অনলের বিরুদ্ধে টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনী ক্যাম্প কমান্ডারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের মৃত ছন্দু মিয়ার বিধবা স্ত্রী শাহানা জানান, আমি একজন বিধবা হতদরিদ্র নারী, কাজ করে কোন রকম একটি ছাপরা ঘরে থাকি। এক বছর আগে চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই অনল তার কাছে এসে বলেন, “জমি আছে ঘর নেই” প্রকল্পের আওতায় ঘরের ব্যবস্থা করে দেবেন। এ জন্য ৩০ হাজার টাকা লাগবে। পরে ধারদেনা করে তার দাবি করা টাকা দিই। পরে ঘর তো ভাগ্যে জুটেনি, টাকা ফেরতের জন্য আজ-কাল করে ঘোরাচ্ছেন।
হতদরিদ্র আরেক নারী নুরেছা আক্তার জানান, আমার স্বামী একজন হতদরিদ্র কৃষক, কোন রকম এক মুঠো ডাল ভাত খেয়ে সংসার জীবন যাপন চলে। আহাদ আলীর ছেলে অনল আওয়ামী লীগ নেতা এসে ঘর দেওয়ার কথা বলে ২৫ হাজার টাকা চেয়েছেন। সুদে টাকা এনে তাকে দিই। কিন্তু এখন পর্যন্ত টাকা ও ঘর কোনটাই পাইনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে অনল বলেন, আমি শাহানা এবং নুরেছার কাছে থেকে ঘর দিব বলে টাকা নেইনি, সুদের উপরে টাকা নিয়েছি। দল ক্ষমতায় নেই, ঘর দিব কোথায় থেকে?
এ বিষয়ে তিয়শ্রী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান মাস্টার বলেন, আমি অনলকে জিজ্ঞাসা করেছি কেন গরিব মানুষের কাছ থেকে ঘরের কথা বলে টাকা নিয়েছে? টাকা নিয়ে থাকলে ফেরত দেওয়ার জন্য বলেছি।
সরেজমিনে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা থাকাকালীন এই অনল মানুষকে মানুষ বলে মনে করেনি। যাকে ইচ্ছা তাকে অপমান অপদস্ত করে বিভিন্ন ভাবে টাকা পয়সা লুট করে খাইছে।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ অলিদুজ্জামান বলেন, আগামী বুধবার ভুক্তভোগী দুই নারী এবং অভিযুক্ত অনলকে উপজেলা পরিষদে ডাকা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

