যমুনা সেতুর ওপর থেকে রেললাইন সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সেতুর ওপর যেখানে এই রেললাইন ছিল, সেখানে নতুন করে সড়ক নির্মাণ করা হবে। তাতে সেতুর উভয় লেন প্রশস্ত হবে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
নতুন রেলওয়ে সেতু চালু হওয়ায় যমুনা সেতুর ওপরের রেললাইন পরিত্যক্ত বলে গণ্য হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে এই রেললাইন তুলে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হতে অন্তত দুই মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল গতকাল শুক্রবার বিকেলে বলেন, চলতি বছরের ১৮ মার্চ যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে নতুন রেলওয়ে সেতু চালু হয়েছে। এর পর থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয় সেই সেতু দিয়ে।
ফলে পুরনো রেললাইনটি আর ব্যবহৃত হচ্ছে না। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সেটি এখন তুলে ফেলা হচ্ছে। বীরবল মণ্ডল আরো বলেন, গত বৃহস্পতিবার যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে কাজ শুরু হয়েছে, যা সম্পন্ন হতে অন্তত দুই মাস সময় লাগবে।
এ বিষয়ে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল বলেন, রেলওয়ে লাইন তুলে নেওয়ার পর সেতুর ওপর আরো সাড়ে তিন মিটার জায়গা পাওয়া যাবে।
এই জায়গা মূল সড়কের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। তাতে সেতুর উভয় লেনে ১.৭৫ মিটার করে জায়গা বাড়বে। আহসানুল কবির পাভেল আরো বলেন, সড়ক সম্প্রসারণের জন্য একটি কারিগরি স্টাডির ভিত্তিতে প্রকল্প নেওয়া হবে। বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে। বর্তমানে সেতুর লেনের প্রস্থ ৬.৩ মিটার।
সম্প্রসারণের পর এটি হবে আট মিটার। তাতে যানজট ও যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা সেতু উদ্বোধন হলেও শুরুতে সেখানে কোনো রেললাইন ছিল না। পরে সেতুর উত্তর পাশে লোহার অ্যাঙ্গল বসিয়ে রেলপথ স্থাপন করা হয়। ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
তবে উচ্চগতিতে ট্রেন চলাচলের কারণে ২০০৬ সালে সেতুর কিছু অংশে ফাটল দেখা দেয়। এরপর ট্রেনের গতিসীমা কমিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়। তাতে একটি ট্রেনকে সেতু পার হতে সময় লাগত প্রায় ২২ মিনিট। ফলে সেতুর দুই পাশে ট্রেনের দীর্ঘ জট তৈরি হতো।
এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে একটি পৃথক রেল সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ওই বছরের ২৯ নভেম্বর রেল সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় এবং ২০২১ সালের মার্চে নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত রেল সেতুটি ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ উদ্বোধন করা হয়।