জিহাদ রানা, বরিশাল ব্যুরো চীফ: বরিশাল সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ২২ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়া সড়ক এলাকায় দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে কোনো উন্নয়নমূলক কার্যক্রম না থাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
শুক্রবার (২৭ জুন) জুমার নামাজের পর পশ্চিম বগুড়া জিয়া সড়কের বাইতুল মদিনা জামে মসজিদের সামনে ভাঙা রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এই কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তারা জানান, নতুল্লাবাদ ব্রিজ থেকে নবগ্রাম রোড পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ, শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী চলাচল করে। অথচ দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার বড় বড় গর্ত, খানাখন্দে দুর্বিষহ যাতায়াতের পাশাপাশি বর্ষাকালে হাঁটু সমান ময়লা পানিতে ডুবে থাকতে হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সড়কটি নির্মাণের সময় সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের স্মরণে সড়কটির নামকরণ করা হয় “শহীদ জিয়া সড়ক”। কিন্তু এরপর থেকেই এই সড়ক উপেক্ষিত থেকে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ১৭ বছরে বেশ কয়েকবার জনপ্রতিনিধি বদলালেও এই সড়কের উন্নয়নের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
এমনকি এই সময়ের মধ্যে বরাদ্দ আসার খবর শোনা গেলেও বাস্তবে কোনো কাজ শুরু হয়নি। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বর্ষা মৌসুমে এই এলাকার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে থাকে এবং সৃষ্টি হয় স্বাস্থ্যঝুঁকি। বাড়ে ডেঙ্গুর সংক্রমণ সম্ভাবনা। রাস্তার বেহাল দশার কারণে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অনেকেই বলেন, জনপ্রতিনিধি বদলায়, কিন্তু তাদের এলাকার চিত্র একই থাকে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সদস্য আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম, সাবেক কাউন্সিলর মো. শহিদুল ইসলাম তালুকদার, সৈয়দ আশরাফ আলী, জায়েদ হোসেন, হারুন, মোঃ নুরুজ্জামান, মামুন, মজিবর রহমান, শানু, হানিফসহ এলাকার অসংখ্য স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা অভিযোগ করেন, বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেও মেলেনি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।
বক্তারা বলেন, যদি দ্রুত এই সড়ক সংস্কার এবং ড্রেনেজ নির্মাণের কার্যক্রম শুরু না হয়, তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন। এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী জানান, জিয়া সড়কের মূল সড়কের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে এবং শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
তবে এলাকাবাসীর দাবি, প্রতিশ্রুতি নয়, দ্রুত দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখতে চায় তারা। কেননা এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির অবস্থা যেমন রয়েছে, তাতে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।