মোহাম্মদ আরীফুল ইসলাম, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: হাওরের দ্বার খ্যাত কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা। বর্ষার আগ থেকেই এ অঞ্চলে নৌকা তৈরির ধুম লেগেই থাকে। বর্ষা এলে পূর্ণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় এ অঞ্চলেন নৌ কারিগরদের। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে দিনের আলো নিভে যাওয়ার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নৌ কারিগরদের চলে নৌকা তৈরির কাজ। বিশেষ করে কুলিয়ারচরের ছয়সূতী ইউনিয়নের ছয়সূতী বাসস্ট্যান্ডের দুই পাশে চোখে পড়ে বিভিন্ন স্থানে নৌকা আর কোশা তৈরির দৃশ্য। কারিগর, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠে ছয়সূতী বাসস্ট্যান্ড।
কারিগরদের তৈরিকৃত এ সকল কোশা ও ছোট নৌকা স্থানীয়দের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব, বাজিতপুর, কটিয়াদী, নিকলী; বি-বাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ, নাছিরনগর, সরাইল এবং নরসিংদী জেলার রায়পুরা, বেলাব, মনোহরদী উপজেলায় বিক্রি হয়ে থাকে।
মেঘনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র আর কালী নদীসহ অসংখ্য খাল-বিল ঘেরা কুলিয়ারচর বাসীর নৌ পথে মাছ ধরার জন্য অনান্য যান বাহনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বাহন কোশা আর ডিঙি নৌকা। এ ছাড়া মালোদের বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ চাষ ও তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বর্ষা মৌসুমে কোশা আর ডিঙ্গি নৌকার কদর বেড়ে যায়। সে সাথে বর্ষা মৌসুমে মানুষের কোনো কাজ না থাকায় তারা নদী, নালা, খাল, বিলসহ প্লাবন ভূমি থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। আর এর জন্য প্রয়োজন হয় কোশা কিংবা ডিঙ্গি নৌকার।
নৌ কারিগরেরা জানান, আকার ভেদে প্রতিটি নৌকা তৈরিতে তারা মজুরি পান ১,৫০০ থেকে ২,৫০০ টাকা। দৈনিক তারা এক থেকে দুইটি নৌকা তৈরি করতে পারেন। ভরা মৌসুমে তারা ৫০-৬০টি নৌকা তৈরি করে থাকেন। যে বছর পানি বেশি দিন স্থায়ী হয়, সে বছর ১০০ থেকে ১৫০টি নৌকা তৈরি করে থাকেন। ক্রেতার চাহিতা অনুযায়ী ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে নৌকা তৈরি করে থাকেন তারা।
গুণগতমান বজায় রাখা ও দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা এসে ভীড় করে ছয়সূতীতে। অনান্য এলাকা থেকে ক্রেতাদের কাছে এখানকার কোশা ও নৌকার কদর রয়েছে বেশ। তাই বর্ষা আসার আগ থেকেই নৌ ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগমে মুখরিত হয়ে থাকে কুলিয়ারচরের ছয়সূতী বাসস্ট্যান্ড।