সৈয়দ ছায়েদ আহমেদ, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই একজন নারী শিক্ষক, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে বছরের পর বছর। এছাড়াও অন্যান্য শিক্ষক সংকটের পাশাপাশি ভবনসহ রয়েছে আরো নানাবিধ সমস্যা। আর এই বহুমুখী সমস্যা বিরাজ করছেন শ্রীমঙ্গল শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রায় শতাধিক বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রীমঙ্গল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। বিশেষ করে বিদ্যালয়ে কোনো নারী শিক্ষক না থাকায় ছাত্রীদের মানসিক, শারীরিক সমস্যাসহ শিক্ষাগত দিক থেকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে দীর্ঘদিন ধরে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দ্বারাই প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। নেই স্থায়ী প্রধান শিক্ষক। ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমেও তৈরি হচ্ছে জটিলতা। শিক্ষক সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল, যার কারণে পাঠদানে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) টিআইবি শ্রীমঙ্গলের সভাপতি শিক্ষক দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্যসহ বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক জানান, এটি একটি মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অথচ এখানে একজন নারী শিক্ষক নেই। সব জায়গাতেই নারীদের এটি নির্দিষ্ট কোঠা আছে। অতচ নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই নারী শিক্ষিক, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মেয়েদের মানসিক বিকাশ ও সমস্যা বোঝার জন্য নারী শিক্ষকের বিকল্প নেই।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘‘অনেক সময় ব্যক্তিগত সমস্যা বা স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়ে নারী শিক্ষক না থাকায় আমরা দিকনির্দেশনা পাই না’’।
বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন জানান, ‘‘তিনি গত বছরের জুন থেকে এ স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। তাঁর আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনিও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি স্কুলে যোগদান করার পর কোন নারী শিক্ষক পাননি। একজন শিক্ষক ছিলেন, তিনি মারা যাওয়াতে এ পদ শূন্য রয়েছে ২ বছরের অধিক সময় ধরে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক আবেদন নিবেন করেছেন একজন নারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য। তিনি আরো জানান, ১৯ জন শিক্ষকের মধ্যে স্কুলে আছেন ১৩ শিক্ষক, ৬জন শিক্ষক সংকট। এছাড়াও একাডেমী ভবনের সংকট। নতুন ভবনের কাজ মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও এখনো শেষ হয়নি।’’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলিপ কুমার বর্ধন জানান, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেক কিছুর বিষয়ে তিনি কথা বলতে পারেন না। তবে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসককে নারী শিক্ষকের নিয়োগের ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেন জানান, ‘‘এ ব্যাপারে তিনি অবগত আছেন এবং শিক্ষ মন্ত্রাণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি একজন নারী শিক্ষক পাওয়া যাবে বলে আশ্বাস দেন।’’