আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার আটঘরিয়ায় একটি কলেজের অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের মনোনয়নপত্র উত্তোলনকে কেন্দ্র করে জামায়াতের অফিসে হামলা, ভাংচুর ও কোরআন শরীফ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে আজ শুক্রবার সকালে টেবুনিয়া-চাটমোহর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ পথসভা করেছে স্থানীয় জামায়াত।
আটঘরিয়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্র দেবোত্তর বাজারে শুক্রবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্র শিবিরসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মি সমর্থকেরা জড়ো হয়।
বৃহস্পতিবার বিএনপির নেতাকর্মিরা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুরসহ অগ্নিসংযোগ করেছে এমন অভিযোগ তুলে নেতাকর্মিরা টেবুনিয়া-চাটমোহর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা নানা শ্লোগান দেয়। এ সময় তারা বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসররা আর যাই করুক পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়ানোর মতো জঘন্য কাজ করেনি।
অথচ বিএনপির গুন্ডা-সন্ত্রাসীরা দলবদ্ধভাবে আমাদের কার্যালয়ে রাখা পবিত্র কোরআন শরীফে আগুন জ্বালিয়ে দিতে একটু দ্বিধাবোধ করেনি।
একই সাথে জামায়াত নেতৃবন্দ দেবোত্তর ডিগ্রি কলেজের অভিভাবক সদস্য নির্বাচন স্থগিত ও জামায়াত অফিসে হামলা, পবিত্র কোরআন শরীফ পুড়িয়ে ফেলায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন আলম বলেন, ভাই যারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে তাদের সাথে আমি আপনি পারবো না।
তারা গতকাল মসজিদের ভিতরে বোমা ফাটানোর নাটক বানিয়ে বিএনপির অনুপস্থিতিতে নাশকতা চালিয়েছে। আর আজ কোরআন শরীফ পোড়ানোর নাটক তৈরী করে মহাসড়ক অবরোধ করে বিশৃংখলা তৈরী করলো। এদের রাজনৈতিক দর্শণই হলো মিথ্যা ও ভন্ডামির উপর।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আবু তালেব মন্ডল বলেন, বিএনপি নেতাকর্মিরা আমাদের আটঘরিয়া দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
লাইব্রেরির অনেক বই পুড়ে গেছে। আমি আজ শুক্রবার পরিদর্শনে করেছি। এ সময় নেতাকর্মিরা আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা পোড়া কোরআন শরীফ নিয়ে মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছে। এই বর্বরতা আর নাশকতামূলক কর্মকান্ডের কঠিন শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্সসহ ঘটনাস্থলেই ছিলাম। কোন ধরণের নাশকতার ঘটনা ঘটেনি। জামায়াতে ইসলামী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তাদের হাতে বেশ কিছু পুড়ে যাওয়া পবিত্র কোরআন শরীফ ছিল।
প্রসঙ্গত, দেবোত্তর ডিগ্রি অনার্স কলেজের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবত সদস্য পদের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত ৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও জামায়াতে ইসলামীর কাউকে মনোনয়নপত্র সংগহ করতে দেয়নি স্থানীয় বিএনপি।
এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা, হাতাহাতি, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংষর্ঘ, মোটর সাইকেল পোড়ানো ও উভয়ের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে টান টান উত্তেজনা চলছিল।