ঢাকা
১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:২৪
logo
প্রকাশিত : মে ১৫, ২০২৫

নবীনগর পৌরসভার পানি সাপ্লাই প্রকল্পের এক বছরের কাজ শেষ হয়নি তিন বছরেও

মোঃ আনোয়ার হোসেন, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসভায় ৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত পানি সরবরাহ প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এক বছরের প্রকল্প তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সাপ্লাইয়ের পানি পাচ্ছে না পৌরবাসী। এ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পৌরবাসী। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে গা ঢাকা দিয়েছে। অবশ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে এবং ৭০% এর উপরে কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২১ সালের ২০ অক্টোবর তৎকালীন পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস নবীনগর পৌর পানি সরবরাহ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ফিলিপাইন ভিত্তিক বিদেশী প্রজেক্ট ইসলামী ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের সম্পূর্ণ অর্থায়নে (৮ কোটি ২৬ লাখ) পুরো এ কাজটির বাস্তবায়ন ও তদারকি করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (DPHE)। ঠিকাদারি কাজ পায় "এনপিআইএল- কম্বাইন্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন" ও "মেসার্স তানভীর আহমেদ জেভি" নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। সিডিউল মোতাবেক প্রকল্পের আওতায় ১৮. ৯ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো, ৩ হাজার ৮৫৫টি বাড়িতে সংযোগ এবং ১২টি স্ট্রিট হাইড্রেন্ট স্থাপনের কথা রয়েছে। কিন্তু বসানো হয়েছে মাত্র দুটি নলকূপ- একটি নবীনগর (প.) পাড়ায়, অপরটি ভোলাচং বাজারে। অধিকাংশ এলাকায় কোনো পাইপলাইন বসানো হয়নি। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে খুঁজে না পাওয়ায় ৯ মাস যাবৎ কাজ বন্ধ আছে।

২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাজুল ইসলাম ও শাহ আলম বলেন, এটা শুধু পানি প্রকল্প নয়, বরং উন্নয়ন বাজেটের ভয়াবহ অনিয়ম। আমরা তিন বছর ধরে শুধু অপেক্ষা করে যাচ্ছি , কিন্তু পানি পাচ্ছি না। আদালত পাড়ার আজাদ বলেন, সাপ্লাইয়ের পানি রাস্তা থেকে বাসা পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য আমাদের নিকট থেকে পৌরসভা ১০০০ ও ৫০০ করে নিবন্ধন ফি’র নামের টাকা নিয়েছে। কিন্তুু এক বছরের প্রকল্প তিন বছর হয়ে গেল আমরা এখনো পানি পাচ্ছি না।

নবীনগর জনস্বাস্থ্য অফিস সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের কাজ ৭০% সম্পন্ন হয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ পর্যন্ত ৩০% বিল পরিশোধ করা হয়েছে। পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবু তাহের বলেন, পৌরসভার নিয়ন্ত্রণে এ কাজ হচ্ছে না, স্বাস্থ্য প্রকৌশলী নিয়ন্ত্রণাধীনে এ কাজ হচ্ছে। এই কাজে দুর্নীতি হওয়ার কোন সুযোগ নেই, আমার জানা মতে প্রায় ৭০% কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আশা করা যায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে।

এনপিআইএল-কম্বাইন্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ঠিকাদার নজরুল ইসলামকে ৫ আগস্টের পর দেখা যায়নি। অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তানভীর আহমেদ জেভির মালিক শামীম আহমেদ দাবি করেন, প্রকল্প কোনো দুর্নীতি হয়নি, আমাদের কাজ ৭০% শেষ হয়েছে, আর মাত্র ৩০% বিল পেয়েছি। তবে পানির মিটার ও সরঞ্জামের ঘাটতি কাটিয়ে আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ সারোয়ার বাতেন বলেন, এই কাজটি সম্পূর্ণরূপে DPHE বাস্তবায়ন করেছে, পৌরসভা এতে জড়িত নয়। দুর্নীতির অভিযোগও সত্য নয়।

এ ব্যাপারে জেলা জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলী নাসির উল্লাহ জানান, পৌরবাসী দ্রুতই পানি পাবে। আর এই প্রকল্পের একটি টাকাও উধাও হয়নি, হওয়ার কোন সুযোগও নেই। ঠিকাদার এ পর্যন্ত কেবল ৩০% বিল তুলতে পেরেছে। এখন কেবল মিটার সংযোগসহ কিছু লাইন স্থাপনের কাজ বাকী আছে। মিটার সংযোজন হলেই, সর্বোচ্চ আগামী জুনের মধ্যে পৌরবাসী এই প্রকল্পের মাধ্যমে আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানি পাবে ইনশাল্লাহ।

নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রাজীব চৌধুরী বলেন, এই প্রকল্পটি আমার দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বেই বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। তবে আশা করছি, অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram