বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি: বরিশালের বাবুগঞ্জে কৃষিক্ষেত্রে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলছে বারি চিনাবাদাম-৮ নামক উচ্চ ফলনশীল চিনাবাদামের জাত। কৃষি উৎপাদন ও আর্থিক স্বনির্ভরতায় এই জাত একটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই সম্ভাবনাকে ঘিরেই বুধবার (৭ মে) সকাল ১১ টায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী বাহেরচর এলাকায় আয়োজিত হয় বিএআরআই উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল বারি চীনাবাদাম-৮ এর উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন প্রযুক্তি শীর্ষক একটি “মাঠ দিবস”। দিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে কৃষক, গবেষক এবং কৃষি কর্মকর্তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পরিণত হয় এটি একটি সফল জ্ঞানবিনিময়ের প্ল্যাটফর্মে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার। তিনি বলেন, “বারি চিনাবাদাম-৮ একটি বৈজ্ঞানিকভাবে উন্নত, রোগ প্রতিরোধী এবং কৃষকবান্ধব জাত, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, আরএআরএস, রহমতপুর, বরিশালের ড.মোঃ সেলিম উদ্দীন ও ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম। তারা আধুনিক চাষ পদ্ধতি, সেচ ও সার ব্যবস্থাপনা, বীজ সংরক্ষণ এবং বাজার জাতকরণ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, রহমতপুর, বরিশালের আয়োজনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ মাহমুদুল হাসান খান, বাবুগঞ্জ উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোঃ শাহাব উদ্দিন প্রমুখ।
প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, আরএআরএস, রহমতপুর, বরিশালের ড. মোঃ গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় কৃষকরা জানান, তাঁরা প্রথমবারের মতো এই জাত চাষ করছেন এবং শুরু থেকেই ভালো ফলনের ইঙ্গিত পাচ্ছেন। রোগবালাই কম, কম সময়ে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব এবং বাজারে এর ভালো চাহিদা থাকায় তারা এই জাত নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বরিশাল অঞ্চলে বাদামের চাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই “মাঠ দিবস” কেবল একটি প্রদর্শনী কর্মসূচি নয়—এটি কৃষি উন্নয়নের একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম। কৃষকদের সচেতনতা, জ্ঞান বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে এ অঞ্চলে সাফল্যের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন সম্ভব। বারি উদ্ভাবিত চিনাবাদামের এই জাত যদি পরিকল্পিতভাবে সম্প্রসারণ করা যায়, তবে এটি হতে পারে টেকসই কৃষির এক উজ্জ্বল প্রতীক।