মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা বঙ্গোপসাগরের ভাঙন থেকে রক্ষা করতে ১৯৯৪ সালে চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্টের (সিডিএসপি) আওতায় বাঁধ নির্মাণ করা হয়। গত কয়েক বছর পূর্ব থেকে বাঁধে ভাঙন দেখা দিলেও সাম্প্রতিক সময়ে ভাঙনের তীব্রতার ফেনী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ২০০ একর মৎস্য প্রকল্প। ইতোমধ্যে ভাঙনে যোগাযোগ ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে গেছে। ক্রমেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে সিডিএসপি বাঁধ।
গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে মিরসরাই উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ভাঙনরোধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিয়মকালে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বাঁধের সংস্কার না হলে মানববন্ধন কর্মসূচির আল্টিমেটাম দেন। আল্টিমেটামের ওই সময়ের মধ্যে বাঁধের সংস্কার কাজ শুরু না হওয়ায় বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে মিরসরাই উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে তিনটি দাবী তুলে ধরেন জামায়াত নেতারা। তন্মধ্যে অন্যতম বেড়িবাঁধকে সংস্কার করে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, মুহুরী প্রজেক্ট গেট থেকে প্রবাহিত পানি স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে যে বালি জমা পড়ে সেগুলো ড্রেজার দিয়ে খনন করে পানির স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে দেওয়া এবং ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে বেড়িবাঁধ আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামী আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নুর নবী, মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা নুরুল কবির, জোরারগঞ্জ থানা জামায়াতের আমীর নুরুল হুদা হামিদী, সেক্রেটারি মাঈন উদ্দিন, ওচমানপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি ইকবাল হোসেন চৌধুরী, ইছাখালী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা জসিম উদ্দিন।
প্রসঙ্গত, মিরসরাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা বঙ্গোপসাগরের ভাঙন থেকে রক্ষা করতে ১৯৯৪ সালে চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্টের (সিডিএসপি) আওতায় ১১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধ নির্মাণ করা হয়। সিডিএসপি বাঁধকে ঘিরে বদলে গেছে এখানকার চিত্র। গড়ে ওঠে শত শত মৎস্য প্রকল্প। এসব মৎস্য প্রকল্পে চাষাবাদ করে ভাগ্য বদলেছে অসংখ্য মানুষের। কয়েক বছর আগে বাঁধ থেকে প্রায় ৩ হাজার মিটার দূরেও মৎস্য চাষ হতো। ভাঙ্গনের তীব্রতার ফলে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে ২৫ টি মৎস্য প্রকল্প। এখান থেকে চট্টগ্রামের মাছের চাহিদার ৭০ শতাংশ উৎপাদিত হয়।