মো. এমরান হোসেন, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নে সংরক্ষিত বনের জায়গা দখল করে বসতঘর নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। বিগত একমাসে সরকারি বন বিভাগের জায়গা অবৈধ দখলে নিয়ে অন্তত ১৫টির অধিক বসতঘর তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে, স্থানীয়দের অনেকে বনের জায়গায় ঘর তৈরী করতে নির্মাণ সামগ্রী মজুদ করার খবর পাওয়া গেছে। এতে করে সরকারি বন যেমন উজাড় হচ্ছে, তেমনিভাবে বেহাত হচ্ছে সরকারি বন বিভাগের জায়গা। পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।
দিনের পর দিন বনের জায়গা দখলে নিয়ে ঘর নির্মাণ অব্যাহত থাকলেও উদাসীন বনবিভাগ। সংরক্ষিত বনের জায়গা অবৈধ দখলে নেয়া আইনত দন্ডনীয় অপরাধ হলেও একটি অসাধু চক্র কতিপয় বন কর্মকর্তাদের মোটা অংকের মাধ্যমে ম্যানেজ করে এহেন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে যা ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে। জানা যায়, চক্রটি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বনের জায়গায় ঘর-বাড়ি নির্মাণে ভূমিকা রেখে থাকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের হাসনাবাদ রেঞ্জের সাপমারা, হাতিমারা ও তারাখো এলাকায় বিগত এক মাসে বন বিভাগের জায়গা দখলে নিয়ে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করেছে স্থানীয় নুর আহমদ, করিম, জসিম, মানিক, কোরবান আলীসহ ১৫টির অধিক পরিবার।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, অবৈধভাবে গড়ে উঠা বসতির আশপাশের অন্তত এক একর বনভূমি কৌশলে নিজেদের দখল করে রেখেছে বসতি স্থাপনকারীরা। তবে এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও বন কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে এসব বসতঘর নির্মাণ করা হচ্ছে বলে দাবী তাদের।
বনের জায়গায় অবৈধভাবে ঘর তৈরি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন আলী বলেন, ‘আমাদের আগে অনেকেই বনের জায়গায় ঘর তৈরি করে পরিবার নিয়ে বাস করে আসছেন। কোন সময় কেউ বাধা দেয়নি।
জানতে চাইলে হাসনাবাদ রেঞ্জ কর্মকর্তা সিফাত আল রব্বানী বলেন, আমি যোগদান করেছি দুই মাস হচ্ছে। এর মধ্যে অবৈধ ঘর নির্মাণের কোন অভিযোগ পাইনি। বনবিভাগের জায়গা জবরদখল করে কেউ যদি বাড়ি নির্মাণ করে থাকে তা উচ্ছেদ করতে অচিরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক হারুন অর রশীদ বলেন, বনের জায়গায় বসতবাড়ি নির্মাণে বনবিভাগের কারো সংশ্লিষ্টতা থাকলে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।