ঢাকা
২৪শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৬:৪০
logo
প্রকাশিত : এপ্রিল ২৯, ২০২৫

বজ্রপাতে সারাদেশে স্কুলছাত্রসহ ১৭ জনের মৃত্যু

দেশের সাত জেলায় বজ্রপাতে একদিনে স্কুলছাত্র, কৃষক-কৃষাণীসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, কিশোরগঞ্জে ৩ জন, সুনামগঞ্জে ৩ জন, হবিগঞ্জে ১ জন, নোয়াখালীতে ২ জন, নেত্রকোনায় ২ জন, মৌলভীবাজারে ১ জন, চাঁদপুরে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে চলতি বছর ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম শুরু এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখল বাংলাদেশ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সারাদেশে কালবৈশাখী ঝড়ের মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঝড়-বৃষ্টি চলমান থাকায় এই হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ইশরাকের মেয়র পদের গেজেট নিয়ে বিতর্ক কেন? শপথ নিলে কতদিন থাকতে পারবেন?
কুমিল্লা ৪ জন: জেলায় বজ্রপাতের পৃথক দুটি ঘটনায় দুই কৃষক ও দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কোরবানপুর পূর্ব পাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে বজ্রপাতে মারা যান দুই কৃষক।

তারা হলেন- দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভুঁইয়া (৩৫) ও কোরবানপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া (কালীবাড়ি) এলাকার মৃত বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬০)।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ওই সময় তারা মাঠে কাজ করছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম (মেম্বার) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে দুপুরের দিকে বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছে দুই স্কুলছাত্র। নিহতরা হলো- ওই এলাকার মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং একই এলাকার আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন। দুজনেই বড় হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হালকা মেঘলা আবহাওয়ায় তারা মাঠে ঘুড়ি উড়াচ্ছিল। আকস্মিক বজ্রপাতে মারাত্মক আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নেত্রকোণায় ২ জন: নেত্রকোণার কলমাকান্দায় আকস্মিক বজ্রপাতে দিদারুল ইসলাম নামে কওমি মাদরাসার এক শিক্ষক ও মদন উপজেলায় আরাফাত মিয়া নামে এক মাদরাসার ছাত্র (১০) মারা গেছেন।

সোমবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী গ্রামে নিজ বাড়ির সামনেই বজ্রপাতে মৃত্যু হয় আরাফাত মিয়ার। সে উপজেলার তিয়শ্রী গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে।

অপরদিকে কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, রোববার দিবাগত রাত ১০টার দিকে আকস্মিক বজ্রপাতে মারাত্মক আহত হোন মাদরাসা শিক্ষক দিদারুল। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

হবিগঞ্জে ১ জন: হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং এর হাওরে বজ্রপাতে এক কৃষক নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে ঝড়বৃষ্টির সময় এই ঘটনা ঘটে।

জেলার ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান জানান, সোমবার সকালে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হলে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার আড়িয়ামুগুর গ্রামের কালবাসী দাসশর ছেলে দূর্বাসা দাশ (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। আহত হয় তার ভাই ভূষণ দাশ (৩৪) ও বোন সুধন্য দাশ (২৮)।

এছাড়াও বজ্রপাতে বানিয়াচং উপজেলার বাগহাতা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে বায়েজিদ মিয়া (১৩) আহত হয়।

সুনামগঞ্জে ৩ জন

সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দোয়ারাবাজার বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দোয়ারাবাজারেই বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন। সোমবার এ ঘটনা ঘটে। দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, তারা নদীতে বালু উত্তোলনের কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাতের শিকার হন তারা। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

কিশোরগঞ্জে ৩ জন: জেলার অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন কৃষক ও একজন কৃষাণী। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলার মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে খড় শুকাতে গিয়ে ফুলেছা বেগম নামে এক কৃষাণী বজ্রপাতে মৃত্যু হয়।

এছাড়া সকাল ১০টার দিকে জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার হালালপুর হাওরে ধান কাটার সময় ইন্দ্রজীত দাস ও কলমা হাওরে ধান কাটার সময় স্বাধীন মিয়া নামে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়।

মৃত ফুলেছা বেগম মিঠামইনে উপজেলার রাণীগঞ্জ কেওয়ারজোড় এলাকার মৃত আশরাফ আলীর স্ত্রী, ইন্দ্রজীত দাস অষ্টগ্রাম উপজেলার হালালপুর গ্রামের মৃত যতীন্দ্র দাসের ছেলে এবং স্বাধীন মিয়া একই উপজেলার খয়েরপুর গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে।

মিঠামইন থানার উপ-পরিদর্শক অর্পন বিশ্বাস জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির পাশে ধানের খড় শুকাচ্ছিলেন ফুলেছা বেগম। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে কৃষক ইন্দ্রজীত দাস বাড়ির পাশে হালালপুর হাওরে ধান কাটছিলেন। এ সময় বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই কৃষক ইন্দ্রজীত দাসের মৃত্যু হয়। একই সময় উপজেলার খয়েরপুর হাওরে কৃষক স্বাধীন মিয়া ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়।

চাঁদপুরে ১ জন: জেলার কচুয়া উপজেলায় বজ্রপাতে বিশাখা সরকার (৩৫) নামে এক কৃষাণীর মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে উপজেলার উত্তর কচুয়া ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের রাধা গবিন্দ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ওই কৃষাণী বাড়ির পাশের জমি থেকে খড় আনতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নিহত বিশাখা সরকার উত্তর কচুয়া ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের হরিপদের স্ত্রী।

মৌলভীবাজারে ১ জন: জেলার বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মাখন রবি দাস (৪৮) নামে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মাখন ওই ইউনিয়নের অহিদাবাদ চা বাগানের মৃত শংকুরা রবি দাসের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার মাখন রবি দাস শ্রীধরপুর গ্রামের আলমাছ মিয়ার জমির ধান চুক্তিতে কেটে দিচ্ছিলেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলে মাখন মারা যান।

নোয়াখালীতে ২ জন: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা মহব্বতপুর গ্রামের মাঠে কৃষিকাজ করার সময় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় ও একই এলাকার আরও এক কৃষক আহত হন।

এছাড়া, রবিবার (২৭ এপ্রিল) নোয়াখালীর সদর উপজেলায় বজ্রপাতে একব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জালিয়াল এলাকার দালাল বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram