রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার "গোয়ালন্দ খাঁজা অফিস হইতে বেড়ীবাঁধ ভায়া জিএন মডেল গভর্মেন্ট প্রাইমারি স্কুলসহ" মোট ৩৬০৫ মিটার সড়ক তৈরীতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কামরুল ব্রাদার্স এর বিরুদ্ধে।
জানা যায়, গত ১০ মার্চ ২০২৪ অর্থবছরে ৭ কোটিরও অধিক টাকা ব্যয়ে সড়ক তৈরী করার দরপত্র পায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কামরুল ব্রাদার্স লিমিটেড। যার কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিলো চলতি বছরের ১০ মার্চ-২০২৫ মধ্যে। কিন্তু কাজের মেয়াদ শেষ হলেও, শেষ হয়নি রাস্তার নির্মাণ কাজ। বর্তমানে কাজের মেয়াদ বর্ধিত করে ২২শে মে-২০২৫ পর্যন্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই সড়কের গোয়ালন্দ খাঁজা অফিস হইতে মাদ্রাসা পর্যন্ত প্রায় ৩০০ মিটার রাস্তার কাজ করা হয়েছে নিম্নমানের পাথর ও আদলা ইট দিয়ে। আর ঢালাই এ ব্যবহার করা হয়েছে নামমাত্র সিমেন্ট, যার বেশিরভাগই বালু। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী পৌরসভাকে অবগত করলে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে পাথর ও আদলা ইট পরিবর্তন করার জন্য লিখিতভাবে চিঠি দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ।
কথা ছিলো পুনরায় সেই ঢালাইকৃত অংশের ঢালাই উঠিয়ে, সেই জায়গায় নতুন করে ঢালাই দেওয়ার। কিন্তু সেই পুরাতন ঢালাই আর ওঠানো হয়নি। দেওয়া হয়নি নতুন করে ঢালাই।
তাছাড়াও অভিযোগ আছে, রাস্তার অবশিষ্ট প্রায় ৩৩০৫ মিটার অংশের গাইড ওয়াল, সিসি ঢালাই ও আরসিসি ঢালাই এ ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। এ নিয়ে পৌরসভার সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ার নাসিরন আক্তার সিমার সাথে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দ্বিমত ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে, সেই জের ধরে গত ২০ এপ্রিল সন্ধ্যায় তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ার নাসরিন আক্তার সিমার সাথে কথা-কাটাকাটি হয় ঠিকাদারের সিনিয়র রাজমিস্ত্রী ইকবালের।
সাথে সাথে মহিলা সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ারকে মেরে হাতের আঙুল ভেঙে গুড়িয়ে দেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এই রাজমিস্ত্রী ইকবাল। এই ঘটনায় সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ার নাসরিন আক্তার সিমা বাদী হয়ে ইকবালকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কামরুল ব্রাদার্স এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তারা জানান, আমরা নিয়ম মেনে কাজ করছি। আমাদের কোন অনিয়ম নেই। আর সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ার নাসরিন আক্তার সিমার উপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এটা রাজমিস্ত্রী ইকবালের ব্যক্তিগত বিষয়।
তবে নিম্নমানের পাথর ও আদলা ইট দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন গোয়ালন্দ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফেরদৌস আলম খান। তিনি বলেন, প্রথমদিকে কিছু নিম্নমানের আদলা ইট ও পথর এসেছিলো। এজন্য ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে তা পরিবর্তন করা হয়েছে।
সড়কে অনিয়মের বিষয়ে জানতে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলেন, কাজ চলছে সঠিক কাজ বুঝে নেওয়া হবে। সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ার নাসরিন আক্তার সিমার উপর হামলা হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিকল্পিত ভাবে তার উপর হামলা করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।
এ বিষয়ে পৌর প্রশাসাক ও গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান বলেন, অনিয়ম হলে তদন্ত সাপেক্ষে নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।