মাজহারুল ইসলাম বিপু, লালমনিরহাট থেকে: বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা,শফিকুর রহমান বলেছেন, এ দেশ থেকে ফ্যাসিস্টদের বিদায় হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়নি তিনি আজ শনিবার বেলা বারোটায় লালমনিরহাট শহরের কালেক্টরেট মাঠে লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের ডাকে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার বেপরোয়া হয়েছিল তারা প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষের বুকে গুলি ছুড়ে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা কে হত্যা করেছে আয়না ঘরে বন্দী করে রেখেছিল। মানুষকে অন্ধ ও পঙ্গ করে দিয়েছে এদের অনেকেই এখন হাসপাতাল ও বাড়ির বিছানায় ছটফট করছে। এ অবস্থায় নির্বাচনের আগে অবশ্যই দুটি কাজ সম্পন্ন করতে হবে একটি হচ্ছে বুলেট হত্যায় বিচার অন্যটি হচ্ছে একটি প্রয়োজনীয় সংস্কার এ দুটি সংস্কার ছাড়া এদেশে জনগণ কোন নির্বাচনে মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন। প্রধান উপদেষ্টা তিনি বারবার ঘোষণা দিয়েছেন ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বিনয়ের সঙ্গে বলবো আমরা ইলেকশন চাই সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমরা কালো টাকার পেশি শক্তির নির্বাচন দেখতে চাই না এজন্য নির্বাচনের জন্য অবশ্যই জনমত তৈরি করতে হবে। এজন্য আমরা সকল ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছি। বিচার ও সংস্কারের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতি বলেন আমরা মসজিদ মন্দির হিন্দুদের পূজা গির্জা চার্সচসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে সহযোগিতা পাহারা দিয়েছি। এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আমরা আগামীতে এমন একটা দেশ চাই আগামীতে কোন প্রতিষ্ঠান পাহারা দিতে হবে না। নির্বাচিত সরকার তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরু ৫৩ ও ৫৪ বছরে এই সমাজকে বিরক্ত করে আমাদেরকে বোকা বানিয়ে ছিল এই ফ্যাসিস্ট সরকার। যারা সংখ্যালঘু বলে মায়া কান্নাকাটি করছেন আমি দেশবাসীকে আহবান জানাবো গত ফেসিস্ট আমলের রংপুরের মৎস্য পল্লীতে দিনাজপুরের সাঁওতাল পল্লীতে কারা জ্বালাও পড়াও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল আপনারা দেখার চেষ্টা করুন। যারা এই মায়া কান্না করেছে তারাই এসব অপকর্ম করেছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই আমরা আল্লাহকে ভয় করি আমাদের হাতে মানুষের জীবন সম্পদ নষ্ট হতে পারে না। আমরা সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু এই শব্দটি আর শুনতে চাই না আমাদের পরিষ্কার বার্তা এই দেশে যারা জন্মগ্রহণ করেছে আর এই দেশের নাগরিক হিসেবে বসবাস করে তারা এই দেশের মর্যাদাবান নাগরিক।
তিনি সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে বলেন, সীমান্তে প্রতিদিন এই আমাদের ভাই ও ছেলেদের বিএসএফরা গুলি করে হত্যা করছে এটা কারোই কাম্য নয়, গত দুদিন আগেও লালমনিহাট জেলায় এক ভাইয়ের বুকের উপর পা রেখে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে লাশ ওপারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন সেকি মানুষ ছিল না, যারা হত্যা করেছে তারা কি মানুষ নয়, আমাদের দেশ একটি স্বাধীন দেশ । ৫৩ বছরে আমাদেরকে দাবিয়ে রাখা হয়েছিল। আমাদের দিকে এক কালো থাবা দিয়ে রেখেছিল আমরা আর কালো থাবা দেখতে চাই না। ইন্ডিয়া আমাদের প্রতিবেশী দেশ তাদের সাথে আমরা প্রতিবেশী এবং পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্মানের সহিত বসবাস করতে চাই। আমাদের ভালো থাকতে না দিলে তারাও ভালো থাকবে কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে।
তিনি পরিশেষে জেলায় শিল্প কলকারখানা, এগ্রবিস্ট ইন্ডাস্ট্রি, মানসম্মত হাসপাতাল, তিস্তা নদীর মহাপুরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন প্রকল্প চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন।
সফর সঙ্গী হিসেবে ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান বেলাল। এ সময় বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমীরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।