বছর তিনেক আগে ধর্ষণ মামলা করে জেল খাটানোর প্রতিশোধ নিতে ফের দাদি ও বোনের সামনে থেকে কলেজছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বুধবার (৯ এপ্রিল) বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাবা।
ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন— আমতলী উপজেলার হলদিয়া গ্রামের মো. জসিম উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মোর্শ্বেদ জয় (২০) ও তার সহযোগী মো. নাহিদ মোল্লা, মো. এনায়েত হাওলাদার, মো. জসিম, মো. ইমরান গাজী, শিরিনা আক্তার রুবি, লিপি বেগম ও নাহার বেগম।
ভুক্তভোগীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে এইচএসসি পাস করেছে। ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর তাকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে একই এলাকার মোর্শেদ জয়, মো. নাহিদ মোল্লা ও মো. এনায়েত। সে সময় এ ঘটনায় তিনি কলাপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
আসামিরা দীর্ঘদিন পর্যন্ত জেল হাজতে থাকার পর জামিনে ছাড়া পায়। সেই মামলাটি বর্তমানে পটুয়াখালীর আদালতে চলমান রয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করায় এবং সেই মামলায় জেল খাটার জেরে প্রতিশোধ নিতে গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ভুক্তভোগীকে নিজের ঘর থেকে ছোট বোন ও দাদির সামনে থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তারা রামদা, ছেনাসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ছিল।
এ সময় ছোট বোন ও দাদি বাধা দিলেও তাদের আটকাতে পারেননি তারা। ভুক্তভোগীর মুখ বেঁধে মোটরসাইকেলে তুলে মোর্শেদ ও নাহিদ তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। এ সময় অভিযুক্তরা বাড়িতে লুটপাট চালায় বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলার বাদী বলেন, আমি ব্যাবসায়িক কাজে বাইরে ছিলাম। আমার স্ত্রী একজন শিক্ষিকা।
ঘটনার সময় তিনি স্কুলে ছিলেন। দিনের বেলায় সিনেমা স্টাইলে জয় ও তার সহযোগীরা আমার ঘরে ঢুকে মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আমি আগে কেন মামলা করে তাদের জেল খাটিয়েছি। সেই আক্রোশে আমার মেয়েকে আবারও তারা অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আমার ধারণা, জয় আবারও আমার মেয়েকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে। মেয়েকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে আদালতে মামলা করেছি। আমার মেয়ে বেঁচে আছে কি না তা-ও জানি না। তবে আমার মেয়ে আসামিদের দখলে আছে।
এ বিষয়ে জানতে মামলার প্রধান আসামি মোর্শেদ জয়ের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আদালতের আদেশ এখনো হাতে পাইনি। আদেশ হাতে পেলে আসামিদের গ্রেপ্তার ও ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।