রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর নির্মাণাধীন পূর্বাচল নতুন শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন গুণীজনের স্মৃতিচিহ্ন। যাদের বাপ-দাদার জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমেই বরাদ্দ পেয়েছে পূর্বাচল উপশহরের ভূমি। অথচ ওই ভূমিকে বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ করে অর্থহীন নামে বেনামে চলছে বিভিন্ন চত্বরের নামকরণ। প্রকল্প গড়ে তোলার শুরু থেকেই এসব চত্বর গুলোকে স্থানীয় বিভিন্ন গুণীজনের নামে নামকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন পূর্বাচলের মূল আদিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত সহ স্থানীয়রা। এমনই এক অদ্ভুত নামে পরিচিতি পাচ্ছে পূর্বাচল উপশহরের ১৯ নম্বর সেক্টরের হেলিপ্যাড চত্বর। অথচ এ চত্বর ও আশপাশের মূল আদিবাসীদের মাঝে ৪জন গুণী মানুষও রয়েছেন।
বিল্লাল হোসেন মাষ্টার; যিনি পূর্বাচলের গোবিন্দপুর (কামতা) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হারার বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুলাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধামসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইসুফগঞ্জ (ইছাপুরা) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থেকে এলাকার মানুষের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সহ আর্থ সামাজিক উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করে গেছেন। এমনকি সফলতার সাথে চাকুরী জীবন শেষ করে এখনও জনসেবামূলক নানা কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
মরহুম আফাজ উদ্দিন মাস্টার; যিনি ইউসুফগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ছিলেন। মাওলানা মোঃ নাসির উদিন ভূঁইয়া; যিনি পূর্বাচলের ২৩নং সেক্টরের গোবিন্দপুর দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপারেনটেন্ট, রূপগঞ্জের কাঞ্চনের রানীপুরা মহিলা মাদ্রাসা এবং দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতাকালীন দাতা সদস্য ছিলেন। ডাঃ নুর মোহাম্মদ নুরু মাস্টার; যিনি একাধারে একজন শিক্ষক ও পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। পূর্বাচল উপশহরের জমি অধিগ্রহণের আগে এসব এলাকা ছিল দূর্গম, প্রায় জনশূন্য ও চারণ ভূমি। নানা প্রতিকূলতার কারণে এসব এলাকার মানুষের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল খুবই নাজুক। সকল প্রতিকূলকে কাটিয়ে এ এলাকার মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এ মানুষগুলোর অবদান স্বরণীয় হয়ে থাকবে পূর্বাচলের মূল আধিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্থ সহ স্থানীয়দের মাঝে।
স্থানীয়দের মতে, পূর্বাচলের ৮ নম্বর সেক্টরের ২১৭ নম্বর রোডকে "বিল্লাল হোসেন মাস্টার রোড" এবং হেলিপ্যাড চত্বরের নাম পরিবর্তন করে "মাষ্টার বাড়ি চত্বর" নামকরণ করা হলে পূর্বাচলের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পাবে এবং স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি মিলবে।