উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ১৬৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষকরা। তরমুজ চাষ করে লাভের আশা করছেন তারা। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন তার তরমুজ চাষ প্রকল্প দেখতে এসে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন অনেকে কৃষকরা।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন,উন্নত মানের বীজের কারণেই ফলন ভালো হয়েছে। এ তরমুজ চাষ করে অন্যরাও লাভবান হতে পারেন- আশা উপজেলা কৃষি বিভাগের। তবে এবারে বৃষ্টি না হওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থা সেচের মাধ্যমে ও পরিশ্রম করে ভালো ফলন ফলিয়েছেন কৃষকরা। গরমের তৃপ্তিদায়ক ফল তরমুজ গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেশি আবাদ হয়েছে। তরমুজের ভালো ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। আকার বড় ও ফলন ভাল হওয়ায় ফসল তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে স্থানীয় বাজারগুলোতে তরমুজ বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিন মির্জাগঞ্জ গ্রামে বিস্তীর্ণ চর জুড়ে রয়েছে তরমুজের ক্ষেত। ইতোমধ্যে খেত থেকে তরমুজ তুলে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি শুরু করেছেন চাষিরা।
মির্জাগঞ্জ এলাকার তরমুজ চাষি ফিরোজ আলম বলেন,প্রায় ২ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ইতোমধ্যে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছি। বৃষ্টি না হওয়াতে অতিরিক্ত খরচও হয়েছে সেচের জন্য। তবুও ক্ষেতে খুব ভাল ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ৫ হাজার গাছ প্রায় ছোট-বড় ৪ হাজার তরমুজ আছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তরমুজের ভালো দাম পেলে ৪ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।
এছাড়াও মির্জাগঞ্জ গ্রামের শাওন হাওলাদার, আলাউদ্দিন,হায়দার আলী ও ঘটকের আন্দুয়া গ্রামের রুহুল আমিন তরমুজ চাষ করেছেন।
সুবিদখালী বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ীরা জানান, এবারে তরমুজের ফলন ভাল হলেও দামও চড়া। তারা চাষিদের কাছ থেকে গড়ে প্রতিটি তরমুজ ১০০ থেকে ২০০ টাকায় কিনেছেন। স্থানীী বাজারে তা প্রকার ভেদে বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে ছয় হাজার ৮১৮ হেক্টর জমিতে রবি শষ্যে আবাদ করা হয়েছে এরমধ্যে তরমুজ ১৬৫ হেক্টর, মুখডাল ৩ হাজার হেক্টর, খেসারি দুই হাজার ২’শত হেক্টর, বোরো ধান ১৫০হেক্টর, সরিষা ৩০ হেক্টর, সূর্যমুখী ৩৫ হেক্টর, চিনাবাদাম ১২০ হেক্টর, মরিচ ৩২০ হেক্টর, গোলআলু ৪৮ হেক্টর, মিষ্টি আলু ৭০ হেক্টর ও বিভিন্ন প্রকারের সবজি ৬৮০ হেক্টর জমিতে এবারে রবি শষ্যের আবাদ হয়েছে।
উপজেলা সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রাজিব কুমার বিশ্বাস জানান,উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে তরমুজ চাষের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় বেশি লাভের আশা করছেন কৃষকরা। অল্প সময়ে তরমুজ চাষ করে অধিক লাভবানের আশায় ফিরোজ আলমের তরমুজ ক্ষেত দেখে অনেক কৃষক আগ্রহ প্রকাশ করছেন।=
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত কয়েকবছর ধরে পায়রা নদীর চরে তরমুজের ভালো ফলন হওয়াতে তরমুজ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। বর্তমানে বাজারও অনেক ভাল রয়েছে। এবারের ফলন ভালো হওয়াতে আগামীতে অনেক কৃষক তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন বলে আশা করছেন।
তরমুজ চাষে উপজেলা কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের চেষ্টার ফলে তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে।