রফিকুল ইসলাম রনি, চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর মাঠে শোভা পাচ্ছে সূর্যমুখী। কৃষক সুমন সহ কয়েজন চাষির পরম যত্নে বেড়ে উঠেছে সূর্যমুখী ফুলের প্রতিটি গাছ। এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী ফুল চাষের উপযোগী হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলন ও দাম বেশ ভালো হবে এমন স্বপ্ন বুনছে কৃষকেরা।
ফাল্গুনের প্রখর রোদে বাতাসে মাঝে মাঝে দোল খাচ্ছে মনকাড়া সূর্যমুখী ফুলগুলো। এ যেন অপরূপ এক দৃশ্য, যেটি আকৃষ্ট করছে সূর্যমুখী ফুল বাগানের পাশ দিয়ে হেঁটে চলা পথচারীদের। পথচারীরা বলেন, রমজানে রোজা রেখে এতো সুন্দর ফুলের দৃশ্যে মনটা ভরিয়ে উঠে। চলতি বছর উপজেলায় মথুরাপুর, পার্শ্বডাঙ্গা, মুলগ্রাম ও ডিবিগ্রামে তেলবীজ হিসেবে সূর্যমুখী ফুল করেছে ৮জন কৃষক।
সরেজমিনে চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের কৃষক সুমন পারভেজের সাথে কথা হয়, তিনি বলেন, অন্যান্য ফসল আবাদের চেয়ে এই ফুল চাষে জমিতে সেচ ও সারের খরচ কম লাগে এবং রোগ বালাই কম এ বিষয় জেনে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এই প্রথম সূর্যমুখী ফুল চাষ করছি। চলতি বছর আমি ৫০ শতক জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ বপন, সেচ, অন্যান্য খরচ ও ফসল তোলা পর্যন্ত প্রায় ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। মাত্র ৯০ থেকে একশত দিনেই ৭-৮ মন বীজ পাওয়া যায়। প্রতি মন বীজ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। এছাড়াও ফুল গাছের ডাটা থেকে জ্বালানি (খড়ি) পাওয়া যায়। সূর্যমুখী ফুলের তেল বাজারে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।
উপজেলার ভাদড়া এলাকার কৃষক শফিকুল জানান, সেও গত বছরের মতো এবারও সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছে। স্বল্প ব্যয়ে অধিক ফলন পাওয়ার আশা করছে এবং অনেক লাভজনক তাই তারা আগামীতেও এই ফুলের চাষ করবে।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি অফিসার সাঈদুর রহমান সাঈদ বলেন, সূর্যমুখী ফুল চাষে ফলন ভালো হওয়ায় স্বল্প খরচে অধিক লাভ, এছাড়াও রোগ বালাই কম। এই ফুল থেকে উৎকৃষ্ট মানের তেল বীজ পাওয়া যায়। সূর্যমুখীর বীজ থেকে উৎপাদিত তেল স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। বাজারে অনেক চাহিদা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে তেল বীজ উদপাদনে উপজেলার মথুরাপুরে প্রকল্প কৃষি বিভাগের আওতায় ৫০ শতক জমিতে প্রদর্শনী হিসেবে কৃষককে সার, বীজ ও কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও অন্য এলাকায় কয়েকজন কৃষক তাদের ব্যক্তি উদ্যোগে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। সূর্যমুখী ফুলের চাষ বাড়াতে কৃষকদেরকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহায়তা করা হচ্ছে। এ বছর উপজেলায় ২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। আগামীতে আরো বৃদ্ধি হবে আশা করছেন।