ঢাকা
১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৪:০৯
logo
প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫

কালাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় দুই লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসক মাত্র ৬ জন

এস এম আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রায় দুই লাখ মানুষের জন্য একমাত্র সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক, নার্স ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য এটি এক ভয়াবহ সংকট। প্রয়োজনীয় ডাক্তার, নার্স, কর্মচারী এবং আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকায় সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে রোগীর চাপ এতটাই বেশি যে চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২৪ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন। গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। সার্জারি, শিশু স্বাস্থ্য, চক্ষু, কার্ডিওলজি, (নাক-কান-গলা), অর্থোপেডিকস এমনকি ডেন্টাল সার্জনের দুইটি পদের মধ্যে একটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। এসব শূন্য পদ পূরণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় চিকিৎসাসেবা কার্যত থমকে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ২৫০-৩০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। অথচ হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা মাত্র ৫০। বাস্তবে প্রায় ৮০-১০০ জন রোগী নিয়মিত ভর্তি থাকেন, ফলে অনেক রোগীকে বারান্দা, সিঁড়ি এবং মেঝেতে অবস্থান করতে হয়। চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগীদের সময়মত সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

হাসপাতালে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির মোট ১৯৪টি পদের মধ্যে ৯৩টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। নার্স, স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, মিডওয়াইফ, ড্রাইভার থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ প্রায় প্রতিটি বিভাগে জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। সার্জারি বিভাগেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর থাকলেও তেলের অভাবে তা চালানো সম্ভব হয় না, ফলে হাসপাতাল অন্ধকারে নেমে আসে। ওয়ার্ডগুলোর পানির সংকট ও টয়লেটের নোংরা অবস্থা রোগীদের জন্য আরও দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। জরুরি ওষুধের অভাবে রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। জরুরি বিভাগের বেশিরভাগ পরীক্ষাও বেসরকারি ক্লিনিক থেকে করাতে হচ্ছে।

চিকিৎসক সংকটের সুযোগ নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কিছু মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিজেদের ‘ডাক্তার’ পরিচয়ে রোগী দেখছেন। অথচ আইন অনুযায়ী, এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ ডাক্তার পরিচয় ব্যবহার করতে পারেন না। এর ফলে অনেক রোগী ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দালাল চক্র এই সুযোগে রোগীদের ভুল বুঝিয়ে ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে অনেকেই অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন।

পৌরসদরের বাসিন্দা আবু বক্কর বলেন, "আমার শিশু সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি ডাক্তার দেখাতে। এখানে এসে দেখি শিশু ডাক্তার নেই। কর্তব্যরত এক ডাক্তার বললেন জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালে যেতে। এখানে ডাক্তার থাকলে আমাদের অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হতো।

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুব উল আলম বলেন, "আমাদের সীমিত জনবল এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দিয়েই যতটুকু সম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবে শূন্য পদ পূরণ এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ ছাড়া মানসম্মত সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।"

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram