তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: ভাষা আন্দোলনের ৬ যুগ পার হলেও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় তৈরি করা হয়নি। শুধু তাই নয় উপজেলার ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও নেই শহীদ মিনার। সে কারনে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা মিলে কলাগাছ কেউবা চেয়ার দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে পালন করে জাতীয় দিবসগুলো।
তবে উপজেলা সদরের বাজারের পাশে একটি স্মৃতিসৌধে উপজেলা প্রশাসন, থানা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ ২১ শে ফেব্রুয়ারীসহ জাতীয় দিবসে বীর শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্থবক অর্পণ করে।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৩৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক, নিম্ন ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২১টি, ৬টি আলিয়া মাদ্রাসা, ২টি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১টি ডিগ্রি কলেজে শহীদ মিনার থাকলেও মাদ্রাসাসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে আজও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। আর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণও করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগণ।
তাহিরপুর বাজারের ব্যবসায়ী সাদেক আলী জানান, ভাষা আন্দোলনের ৬ যুগ পার হলেও আজও ভাষা আন্দোলনের শহীদের সম্মানে একটি শহীদ মিনার তৈরি করা হয়নি এই উপজেলায়। তা খুবই দুঃখজনক। সে কারনে বাজারে প্রবেশ মুখে স্মৃতিসৌধেই ২১ ফেব্রুয়ারিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মধ্য তাহিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করা হলে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ জাতীয় দিবস গুলোতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারতাম কিন্তু শহীদ মিনার না থাকায় উপজেলা সদরের বাজারে পাশে স্মৃতি সৌধে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাঘা জানান, মাতৃভাষার জন্য শহীদদের আত্মত্যাগ ও মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে ও আগামী প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এবং শহীদদের কৃতিত্ব স্মরণীয় করে রাখতে শহীদ মিনার তৈরি করা খুবেই প্রয়োজন।
উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান শেখ জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের ব্যাপারে কোন নির্দেশনা নেই। তবে প্রত্যেকটা বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন করলে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের শহীদের কথা মনে রাখবে, আর তার জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাসেম বলেন, উপজেলা সদরে শহীদ মিনার নেই, তবে শহীদ মিনার স্থাপনের পরিকল্পনা অনুযায়ী জায়গাও নির্ধারণ করা রয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে সবার সহযোগিতা নিয়ে। আর প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শহীদদের স্মরণে ও সম্মানে শহীদ মিনার তৈরি করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলবো যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।