ঢাকা
৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
দুপুর ১:৫৩
logo
প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

দোয়ারাবাজারে ভাঙন আতঙ্কে সুরমা পাড়ের মানুষ, ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা

মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: শত কোটি টাকায় নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও ভাঙন আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে এখন দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা পাড়ের মানুষ। ইতিমধ্যে ভাঙন শুরু হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। খোদ উপজেলা সদরের মুরাদপুর, মাঝেরগাঁও, নৈনগাঁও, মাছিমপুর নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে রয়েছে ভাঙন ঝুঁকিতে। শতকোটি টাকার নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে না হতেই মুরাদপুর, মাঝের গাঁও গ্রামের বিভিন্ন স্পটে জিও ব্যাগ সঠিকভাবে না ফেলায় ব্লক সরে গিয়ে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে এবং ব্লকের নীচ থেকে মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে।

ইউপি সদস্য এরশাদুর রহমান বলেছেন, মুরাদপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা লালমিয়ার বাড়ির নিকটে ব্লক সরে গিয়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। কাজের শুরুতে এখানে সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে না জানিয়ে আসলেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। এখন ঝুঁকিপূর্ণ স্পটে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা না হলে বর্ষা শুরু হলেই ভাঙন শুরু হবে নদীর পাড়।

মুরাদপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান হবিব জানিয়েছেন, মুরাদপুর গ্রামে দায়সারা ভাবে বসানো ব্লক গুলোর নীচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। এতে ফাটল এবং গর্তের সৃষ্টি হয়ে এখন আমরাও ভাঙন ঝুঁকিতে আছি। নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পে পাউবো'র কর্মকর্তাদের উদাসীনতা এবং ঠিকাদার সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম দুর্নীতিই এর জন্য দায়ী। এ ছাড়াও নদীতে জিও ব্যাগ সঠিকভাবে না ফেলার কারণে এমনটি হয়েছে।

অপরদিকে বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পর থেকে উপজেলার অন্যান্য এলাকায় সুরমার ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়েছে। উপজেলার নদীর তীরবর্তী গ্রাম গুলোতে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হওয়ার দৃশ্য প্রতিদিন বাড়ছে। দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম মাছিমপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের কবলে তাদের ভিটে-মাটি সর্বস্থ হারিয়ে এখন মানবতর জীবন যাপন করছে। এখানকার মানুষের শতশত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার কারণে অনেকেই ভূমিহীন হয়ে পড়েছেন।

উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের পঞ্চায়েতি কবর স্থান, দোকান পাট ও বোগলা-দোয়ারাবাজার সড়কের শরীফপুর অংশটি ভাঙনের চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইতিমধ্যে ভুজনা গ্রামের ঘরবাড়ি সহ ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও এক মাত্র যোগাযোগ মাধ্যম ভুজনা-দোয়ারাবাজার সড়কটি ও চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ওই এলাকার নদী পাড়ের বেশ কিছু সড়কের অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাই আগে থেকে সরকারি উদ্যোগে ভাঙন কবলিত এলাকায় জিওব্যাগ ফেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এসব এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংষ্কা করছেন স্থানীয়রা।

অন্যদিকে সরেজমিন ভুজনা গ্রামের ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, সুরমা নদীর তীর বর্তী ফসলি মাঠে মরিচ, টমেটো, বেগুন, বাদাম, আলু, সহ শতশত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম (নেয়ামত) বলেন, প্রতিবছর ভুজনা এলাকার ঘরবাড়ি ও শতশত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারের কোন উদ্যোগ নেই।

মাছিমপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান (মিজু) বলেন, সুরমা নদীর ভাঙনের কারণে এই এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন মানবতার জীবন কাটাচ্ছেন।

শরীফপুর গ্রামের শাহীন বলেন, প্রতি বছর সুরমা নদীর পানি তলদেশে গেলেই ভাঙন দেখা দেয়। শরীফপুর কবর স্থানের অধিকাংশ কবর ভেঙে গেছে। সেই সাথে সাইডিং ঘাটে আমার দোকান ঘর গুলো হুমকির মুখে রয়েছে। এই এলাকায় জিওব্যাগ না ফেললে বোগলা-দোয়ারাবাজার সড়কটিও নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে।

ভুজনা গ্রামের হানিফ মিয়া বলেন, ভুজনা গ্রামের অনেক বাড়িঘর ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে। এখন শতশত বিঘা ফসলি জমির ফসল সহ ভেঙে যাচ্ছে। সরকার কোন উদ্যোগ না নিলে একমাত্র সড়কটি সহ বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে।

নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পে ভাঙনের বিষয়ে জানতে চাইলে পাউবো'র উপজেলা এসও সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, এ বিষয়ে জেলা অফিসকেও অবহিত করেছি। আশা করছি দ্রুত সংষ্কার করে দেওয়া হবে।

সুনামগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেছেন, দোয়ারাবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সুরমা নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে ঐসব এলাকাতে ও নদীর তীর সংরক্ষণের আওতায় নেওয়া হতে পারে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram